শাসমলবাবু, সদানন্দ, সুজন এবং

মানিকলমকারি : ২

আগের পর্বে

জটায়ু বলতেই এক কথায় মনে আসে টাক মাথা, সদাহাস্য এক মুখ, চওড়া গোঁফ। কিন্তু শুরু থেকেই কি জটায়ু এমন ছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই যেতে হবে ফেলুদার প্রাক-সিনেমা যুগে। যখনও সোনাল কেল্লা রুপোলি পর্দায় ফুটে ওঠেনি। ফেলুদার গল্পে জটায়ুর চরিত্র তৈরি করার পর থেকেই বার বার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন সত্যজিৎ। প্রতি গল্পেই কিছু না কিছু বদল হয়েছে তাঁর চেহারায়। তবে শেষমেশ সন্তোষ দত্তকেই তিনি এঁকেছিলেন নিজের খেরোর খাতায়। পাকাপাকিভাবে সেই চেহারা বইয়ের মলাটে আসে সিনেমা হওয়ার আরও বছর দুই পর।

এবং দুইজন ব-নামধারী চরিত্র। স-বটাই অদ্ভুত। জটায়ুর উপন্যাস-মার্কা মোক্ষম একটা নাম হল বেশ! সবেতেই স আর ব! এই স-ব শুনেই সটান কারো মনে চন্দ্রবিন্দুর চ, বিড়ালের তালব্য শ... মনে হতেই পারে। কিন্তু আমাদের যে প্রমাণ করে ছাড়তেই হবে যে, এই স-সঙ্কুল আর ব-এর বাড়াবাড়িওয়ালা শব্দের খেলাতে কোনো কসরতি নেই, একটা অঙ্কের নিয়মে এটা অনিবার্যই ছিল। সত্যজিতের গল্পের এই তিনজন স আর দুইজন ব-নামধারী চরিত্রের কথা কীসে হঠাৎ মনে পড়ল জানেন? মনে পড়ল, কেরালার ওই নিরীহ অসহায় হাতিটির হত্যালীলার ঘটনায়। মানুষ-ই এত নিষ্ঠুর পারল তো হতে? আসলে সত্যজিৎ রায়ের লেখা ওই স-ব চরিত্রগুলির সঙ্গেই যুক্ত হয়ে আছে পশুপাখির দুনিয়া। এদের কেউ অত্যন্ত ভালোবাসে ওই জগৎটা, কেউ আবার ভালোবাসে না তাদের, কেউ লক্ষ করে তাদের, কেউ আবার হত্যা করে।