সারা গায়ে পশমের চাদর! অদ্ভুত সাপের দর্শন মিলল থাইল্যান্ডে

হাঁসের গায়ে সজারুর কাঁটা কিংবা কচ্ছপের কাঁধে বকের মুণ্ডু— এসব উদ্ভট প্রাণীরা রীতিমতো সেলিব্রিটি-সম। অন্তত বাংলায় তো বটেই। ছোটোবেলায় সুকুমার সেনের দৌলতেই তারা হয়ে উঠেছে আমাদের সুপরিচিত। কিন্তু সাপের (Snake) গায়ে যদি ভেড়ার মতো পশম (Fur) থাকে? এটা হযবরল-র সিলেবাসের বাইরে হয়ে যায় বৈকি! তবে এবার এমনই এক প্রাণীর হদিশ মিলল থাইল্যান্ডের (Thailand) জলাভূমিতে!

পৃথিবীর প্রায় সমস্ত সাপের দেহেই আঁশ লক্ষ করা যায় অন্যান্য সরীসৃপদের মতো। শীতল রক্তের প্রাণী হওয়ায়, এই আঁশই তাঁদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বাইরে থেকে। সেইসঙ্গে বুকে ভর দিয়ে চলার সময় মাটির সঙ্গে ঘর্ষণ কমায় আঁশ। তবে সদ্য আবিষ্কৃত সাপটির দেহে আঁশ নয়, বরং সাপের গায়েই থরে থরে সাজানো পশম। আর সেই পশমের রং-ও বেশ উদ্ভট— গাঢ় সবুজ! 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডে সাখোন নাখোন প্রদেশের একটি জলাভূমিতে প্রথম সন্ধান মেলে এমনই এক অদ্ভুত সাপের। চেহারার বৈচিত্রের জন্যই গবেষকরা এই প্রাণীর নামকরণ করেছেন ‘গ্রিন ফারি স্নেক’। থাইল্যান্ডের এক স্থানীয় বাসিন্দা তু-এর নজরে আসে সাপটি। বাড়ির কাছের জলাভূমিতে প্রথমে দু’ফুট দীর্ঘ সাপটিকে দেখে কাল্পনিক ড্রাগনের কথাই প্রথম মনে এসেছিল তাঁর। এমন প্রাণী ভাগ্য ফেরাতে পারে ভেবেই সেটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। সংরক্ষণ করেন মাটির পাত্রে। তবে খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে এই সংবাদ। বিজ্ঞানীদের কাছেও পৌঁছে যায় খবর।

ইকোলজি এশিয়ার গবেষকদের অভিমত, পাফ ফেসড ওয়াটার স্নেকের কোনো অজানা প্রজাতি হতে পারে এই সাপটি। সাধারণত, এই সাপেদের গায়ে বাদামি, কমলা ও কালো বর্ণের ব্যান্ড দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সদ্য আবিষ্কৃত সাপটির শরীরে গাঢ় সবুজ এবং ধূসর বর্ণের দীর্ঘকায় পশম রয়েছে। তবে গায়ের ব্যান্ডের সজ্জা দেখে পাফ-ফেসড ওয়াটার স্নেক গোত্রেরই কোনো সাপ বলে, প্রাথমিক ধারণা করছেন গবেষকরা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এখনও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে। 

আরও পড়ুন
মানুষ ছাড়াও হাসতে অভ্যস্ত ৬৫টি প্রজাতির প্রাণী! জানাচ্ছে গবেষণা

বৈজ্ঞানিক-মহল তো বটেই, গোটা বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষদেরও কৌতূহলের শেষ নেই সেই সবুজ পশমে মোড়া সাপ নিয়ে। সুকুমার সেন জীবদ্দশায় এই সাপ দেখে গেলে, কী নাম দিতেন তিনি? 

আরও পড়ুন
শুধু মানুষই নয়, অন্য প্রজাতিকে বিলুপ্তিতে ঠেলে দেয় এই 'ভারতীয়'রাও!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্রে মিশছে বিদেশি প্রজাতি, বাসা বাঁধছে কাঁকড়া এবং ঝিনুকও