নদীতে প্লাস্টিক ফেলা আটকাতে ঠায় দাঁড়িয়ে, গোদাবরীর ‘রক্ষাকর্তা’ নাসিকের যুবক

নদীর ওপর দিয়ে চলে গেছে ছোট্ট ব্রিজ। সেখানেই দাঁড়িয়ে রয়েছে এক যুবক। হাতে বাঁশি। প্লাস্টিক ব্যাগে করে কেউ আবর্জনা নিয়ে নদীতে ফেলতে গেলেই, এগিয়ে আসছেন তিনি। বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছেন তাঁদের। আবর্জনা-ভরা ব্যাগ রাখতে বলছেন ব্রিজেরই একধারে। পরিবেশরক্ষায় এভাবেই লড়ে যাচ্ছেন সেই যুবক। সম্প্রতি ট্যুইটারের দৌলতে প্রকাশ্যে এল সেই ভিডিও-ই।

আইএফএস অফিসার স্বেথা বদ্দু সম্প্রতি ট্যুইটারে ভিডিওটি প্রকাশ করেন। নাসিকে গোদাবরী নদীর ওই সেতুর কাছেই তাঁর বাড়ি। কাজেই যেতে আসতে প্রায়শই চোখে পড়ে এই দৃশ্য। তবে পরিবেশরক্ষার এই ব্যক্তিগত উদ্যোগ যেন সাধারণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে, সেই উদ্দেশ্যে ভিডিওটি প্রকাশ করেন তিনি।

চন্দ্রকিশোর পাটিল নামের ওই ব্যক্তি গত পাঁচ বছর ধরেই চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রহরীর কাজ। তার জন্য কোনো সরকারি অনুদান যে পান তিনি, এমনটা একেবারেই নয়। তবে নাসিকের প্রাণ এই গোদাবরী দূষিত হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। আর এই পুজোর মরশুমে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। কারণ, উৎসবের সময় বর্জ্যপদার্থ, পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রীও প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে ফেলে নদীতেই। ফলে নদীর নাব্যতা যেমন কমে, তেমনই প্রভাব পড়ে নদীর বাস্তুতন্ত্রের ওপরেও। 

বহু বছর ধরেই পরিবেশবিদরা সরব হয়ে আসছেন এই বিষয় নিয়ে। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। আর এই পরিস্থিতিই ভাবিয়ে তুলেছিল চন্দ্রকিশোরকে। উপায় না পেয়ে তাই নিজেই লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিজেই প্রহরীর কাজ করে যাচ্ছেন অক্লান্তভাবে। ব্রিজের ওপরেই জড়ো করে রাখছেন আবর্জনা। পরদিন সকাল হলেই তা সরিয়ে নিয়ে যাবে পৌরসভার কর্মীরা। গত পাঁচ বছর ধরে চলছে দূষণের বিরুদ্ধে এই লড়াই। যতদিন সুস্থ থাকবেন, ততদিন এই কাজ চালিয়ে যাবেন তিনি। এমন কথাও শোনা যায় চন্দ্রকিশোরের কণ্ঠে। সমস্ত কিছু জানার পরেও যখন সচেতনা দেখা দিচ্ছে না মানুষের মধ্যে, ঠিক সেই সময়ে দাঁড়িয়ে চন্দ্রকিশোর যেন এক উল্টোছবি নাসিকের...

Powered by Froala Editor