মহামারীর তৃতীয় তরঙ্গ মোকাবিলায় উদ্যোগী মহারাষ্ট্র, সংক্রমণের কেন্দ্রে থাকতে পারে শিশুরা

করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মহারাষ্ট্র। লকডাউনের ফলে পরিস্থিতি মোটামুটি সামাল দেওয়া গিয়েছে। আর এর মধ্যেই তৃতীয় তরঙ্গ মোকাবিলার জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে মুম্বাই শহরে। সোমবার বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠকে বসে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীসভা। আলোচনায় বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা উঠে আসে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়ে।

আলোচনার শেষে মহারাষ্ট্রের পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী তথা মুম্বাই শহরের বিধানসভা অভিভাবক আদিত্য ঠাকরে জানান, করোনা ভাইরাস যেমন নিজের মতো করে অভিযোজন করছে তেমনই স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকেও বদলাতে বদলাতে যেতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে প্রতিটা শহরের মেডিক্যাল অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন, কোভিড আক্রান্ত শিশুদের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। এদিনের আলোচনায় মুম্বাই শহরে কীভাবে সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়, তাই নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। পূর্ব মুম্বাইতে ইতিমধ্যে ৭০০ শয্যা বিশিষ্ট নেস্কো জাম্বো কোভিড কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। বৃহনমুম্বাই পৌর সংস্থা জানিয়েছে, এই সেন্টারের শয্যা সংখ্যা দ্রুত বাড়ানো হবে। তার  মধ্যে শিশুদের জন্যই থাকবে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষ ইউনিট। প্রতি ২৫টি সাধারণ শয্যার জন্য থাকবে একটি করে আইসিইউ-র ব্যবস্থা।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, করোনা ভাইরাসের প্রথম তরঙ্গ মূলত অধিক বয়সের মানুষদের আক্রমণ করেছে। ২০২০ সালে মূলত বরিষ্ঠ নাগরিকদের শরীরেই সংক্রমণ দেখা যায়। তবে দ্বিতীয় তরঙ্গে সব বয়সের মানুষই কমবেশি আক্রান্ত। এর মধ্যে ৩১-৪০ বছর বয়সের মধ্যে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। তবে ২১-৩০ বছরের মানুষদের মধ্যেও সংক্রমণের হার ১৭ শতাংশের বেশি। ১০-২০ বছরের মধ্যে সংখ্যাটা ৬ শতাংশের কিছু বেশি। এমনকি ১০ বছরের নিচের শিশুদেরও অন্তত ৩ শতাংশ সংক্রমণের শিকার। যদি ভাইরাস রূপ বদলে মহামারীর তৃতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়ে, তাহলে আক্রমণের কেন্দ্রে মূলত কমবয়সিরাই থাকবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকরা বিশেষভাবে আতঙ্কিত ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে। ভারতে এখনও এই বয়সের জন্য প্রতিষেধকের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি চলতি প্রতিষেধকগুলি শিশুদের শরীরে প্রয়োগ করার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অন্তিম অনুমতিও পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের রক্ষা করার কাজটা আরও কঠিন হবে। মুম্বাই শহরের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের অন্যান্য শহরেও অনুরূপ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদিত্য ঠাকরে। আশা করা যায়, তৃতীয় তরঙ্গে মহারাষ্ট্র অনেকটাই শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবে।

আরও পড়ুন
সীমান্ত ছেড়ে, করোনা মোকাবিলায় এবার সামিল সামরিক চিকিৎসকরাও

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
রেমডিসিভির মানেই করোনা-জয় নয়, জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা