অবাক করা স্মৃতিশক্তি, ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম উঠল বাঙালি আইনজীবীর

যাঁর লেখা বই আনন্দ দেয়, সেই প্রিয় লেখকের পরিচয়, জন্ম, মৃত্যুর তারিখ জানার ইচ্ছে তো স্বাভাবিকভাবে হবেই। তার খোঁজ রাখেন যে-কোনো বইপ্রেমী। তবে রবীন্দ্রনাথ, সত্যজিৎ, নজরুলের বাইরেও হাজার হাজার বিখ্যাত বাঙালি ব্যক্তি-সম্পর্কিত এই তথ্যগুলি সার্বিকভাবে মুখস্থ রাখা সহজ কাজ নয়। কিন্তু সেই অসম্ভবকেই এবার সম্ভব করে দেখালেন নরেশচন্দ্র ঘোষ।

নরেশবাবু পেশায় একজন উকিল। কলকাতায় শিয়ালদহ হাইকোর্টেই প্র্যাকটিস করেছেন ফৌজদারি আইনবিভাগে। আইনের জগতে তাঁর রয়েছে বেশ নাম-ডাকও। তবে আইনের বইয়ের ফাঁকেই পড়তে ভালবাসতেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস। সাহিত্যচর্চা তাঁর নেশাই ছিল বলা চলে। আর সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল অন্য এক যাত্রার। গত বছর থেকেই শুরু করেছিলেন বিখ্যাত বাঙালি ব্যক্তিত্বদের নাম, জন্ম এবং মৃত্যু তারিখ স্মৃতির দেয়ালে গেঁথে ফেলার কাজ। লকডাউনের ফাঁকা সময়ে যা তাঁকে বাড়তি সুযোগ করে দেয়।

শেখার বা পড়াশোনার কোনো বয়স থাকে না। এই প্রবাদ বাক্যকেই আরেকবার প্রমাণ করলেন আইনজীবী নরেশবাবু। এখন তাঁর বয়স ৭২ বছর। আর এই বয়সেও যে নিজের স্মৃতিশক্তিকে ঝালিয়ে নেওয়া সম্ভব তা বোঝালেন তিনি। প্রায় দেড় হাজার বিখ্যাত ব্যক্তির তথ্যকে আত্মস্থ করেছেন এই বাঙালি আইনজ্ঞ। কাঁচের মত স্বচ্ছ স্মৃতিতে বলে যেতে পারেন প্রায় শ’ দুয়েক গান-কবিতাও।

এই প্রতিভার জেরেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম প্রজ্বলিত হল তাঁর। গত ৯ জুলাই পাঞ্জাবের ফরিদাবাদে রেকর্ডের দপ্তরে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টায় ৩৪২টি প্রশ্নের মধ্যে ৩৪০-টির সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হন বর্ষীয়ান এই অ্যাডভোকেট। তাঁর এই দক্ষতায় মুগ্ধ রেকর্ডস অফিসের বিচারকরা। বিস্মিত সারা বাংলার মানুষও। চেষ্টা করলে যে সবকিছুই সম্ভব তা যেন নতুন করে শেখাচ্ছেন নরেশবাবু। যিনি পারতপক্ষে যেন এক জীবন্ত উইকিপিডিয়া...

Powered by Froala Editor