সারা পৃথিবীতে আক্রান্ত মাত্র ১৪ জন, বিরলতম রোগ কাটিয়ে উঠলেন কাটোয়ার ব্যক্তি

আমাদের শরীরকে নির্দিষ্ট ছন্দে বেঁধে রাখে যে নার্ভ, তাই যখন অকেজো হয়ে পড়ে, তখন অবস্থাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক এমনটাই হয়েছিল কাটোয়ার অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরীরে। প্রথমে পেটের ভিতরের অংশে, অর্থাৎ নাভির পিছন থেকে মেরুদণ্ড পর্যন্ত বিভিন্ন টিস্যু পচতে শুরু করেছিল। সেইসঙ্গে শুরু হল অসহ্য যন্ত্রণা। একটা সময় পর আর নড়াচড়া করার ক্ষমতাও থাকল না পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া নিবাসী অরিন্দমবাবুর। কিন্তু সবাইকে আশ্চর্য করে এই অবস্থা থেকেও সুস্থ হয়ে ফিরে এলেন তিনি।

ডাক্তারি পরিভাষায় রোগটির নাম 'প্রাইমারি ইডিওপ্যাথিক রেট্রোপেরিটোনিয়াল নেক্রটাইজিং ফাসিআইটিস'। তেমন পরিচিত নাম নয়। কারণ এর আগে অবধি সারা পৃথিবীতে মাত্র ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই রোগে। তার মধ্যে ১১ জনের ক্ষেত্রেই মৃত্যু ঘটেছে। কোনক্রমে প্রাণ রক্ষা করেছেন বাকি ৩ জন। সেই তালিকাতেই চতুর্থ নাম অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়।

জীবনের আশা প্রায় ত্যাগ করেই ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে এসেছিলেন অরিন্দমবাবু। কিন্তু হাল ছাড়েননি চিকিৎসক শুদ্ধসত্ত্ব সেন। দিনের পর দিন রোগীকে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছেন। একটা একটা করে বাদ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলি। আর এভাবেই ১৫ দিনের পরিশ্রমের পর মিলেছে সাফল্য। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন অরিন্দমবাবু।

এই সাফল্যকে ইতিমধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক বিস্ময় বলে মনে করছেন অনেকে। মেডিক্যাল জার্নালেও কেস রিপোর্ট প্রকাশিত হতে চলেছে। এর আগে যে তিনজন সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ছিল ২০ বছরের মধ্যে। কিন্তু এক্ষেত্রে রোগীর বয়স ছিল অনেকটাই বেশি। ফলে শুদ্ধসত্ত্ববাবুর নিষ্ঠা রীতিমতো প্রশংসা কুড়িয়েছে। আর চিকিৎসকের নিজের কথায়, শহর কলকাতার বুকেই যে বিশ্বমানের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যেতে পারে, এই ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল।

আরও পড়ুন
শুধুমাত্র চিকিৎসার অভাবেই ভারতে মারা যান ১০ শতাংশ মানুষ, বলছে সমীক্ষা

Powered by Froala Editor

Latest News See More