মুম্বই-এর সমুদ্রতটে ঝাঁকে ঝাঁকে ফ্লেমিংগো পাখি, উঠছে অভয়ারণ্য তৈরির দাবিও

মুম্বইয়ের সমুদ্র উপকূলে সী-উড অঞ্চলকে ঘিরে বিরাট তটভূমি। সারাবছর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে এখানে। কিন্তু এখন দেশজুড়ে লকডাউনের পরিস্থিতিতে আর মানুষের দেখা নেই। তবে শুনশান নেই সমুদ্রতট। বরং নীল জলরাশির উপর ঝাঁকে ঝাঁকে ভিড় করেছে ফ্লেমিংগো পাখি। মানুষের ভয়ে ছোট্ট এই পাখিরা সমুদ্র থেকে দূরে কোথায় যেন লুকিয়ে থাকত। কিন্তু এখন আর ভয় নেই। অতএব তারা নিজেদের নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে এসেছে দল বেঁধে।

করোনা মহামারীর প্রেক্ষিতে লকডাউন চলছে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশে। রাস্তায় মানুষের অনুপস্থিতি যেন বন্য পশুপাখিদের কাছে এক অভাবনীয় সুযোগ এনে দিয়েছে। নানা জায়গায় তাদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। কোথাও গন্ডার, কোথাও হরিণ তো কোথাও পাহাড়ি ছাগল; শহরের নিরিবিলি রাস্তায় ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। সেসব জায়গায় অন্য সময় মানুষের ভিড় লেগে থাকে। আর সেই তালিকাতেই যুক্ত হল মুম্বইয়ের সী-উড সমুদ্র উপকূলের নাম।

সমুদ্র উপকূলে পাখিদের বৈকালিক কলকাকলির ছবি ধরা পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল আগরওয়ালের ক্যামেরায়। এমন ছবি দেখে মুগ্ধ সকলেই। সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে বহু মানুষের আছে পৌঁছে গিয়েছে সেই ভিডিও। সেইসঙ্গে অনেকেই মনে করছেন, এভাবে পশুপাখিদের কাছ থেকে সমস্ত পৃথিবীটা কেড়ে নেওয়ার কোনো অধিকার মানুষের নেই। চলতি বছরের শুরুতেই সী-উড অঞ্চলের স্থানীয় অধিবাসীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এই সমুদ্রতটটি ফ্লেমিংগো পাখির জন্য অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করা হবে। সেই দাবিই আবার জোরালো হয়ে উঠেছে ভিডিওটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই। সুনীল আগরওয়াল নিজেও সেই দাবির পক্ষে সওয়াল করেছেন।

কুকুর বিড়ালের মতো কিছু প্রাণী বেঁচে থাকার জন্য মানুষের উপর নির্ভরশীল হলেও অধিকাংশ পশুপাখিই মানুষকে ভয় পায়। মানুষের থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে থাকতেই পছন্দ করে তারা। অথচ মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্বের নমুনা রাখতে গোটা পৃথিবীতেই কর্তৃত্ব করতে চেয়েছে। এর ফলে বাসস্থান হারিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে বহু প্রাণী। আগামী দিনে এই সংকট যেন আরও ভয়ঙ্কর চেহারা না নেয়, সেই দায়িত্বও মানুষকেই নিতে হবে। আর সেই উদ্যোগ যে কতটা জরুরি, লকডাউনের সময়টাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

More From Author See More