৩০ বছরে পা দিল হাবল, ব্রহ্মাণ্ডকে নতুন চোখে দেখেছে যে দূরবীন

উরসা মেজর ছায়াপথের মধ্যে ছোট্ট একটি অঞ্চল, দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের কাছে একটা রহস্য ছিল। কোনো দূরবীনেই কিছু দেখা যায় না, কেবল একটা নিরেট অন্ধকার। কিন্তু বাস্তবিকই কি সেখানে কিছু নেই? এই না থাকাটা আপাত দৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হতেই পারে। মহাকাশের অনেক জায়গাই তো শূন্য। কিন্তু বিজ্ঞানীদের সন্দেহ হতে থাকে। আর অবশেষে যে ছবি পাওয়া যায়, তাতে সত্যিই তাঁদের সন্দেহ সঠিক প্রমাণিত হয়। আছে আছে, নক্ষত্র আছে।

সেই নক্ষত্র দেখা গেল ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। আর তার কৃতিত্ব নাসার স্পেস টেলিস্কোপ হাবলের। টানা দশদিন ধরে বিভিন্ন ওয়েভলেংথে ছবি তুলতে থাকে এই দূরবীন। প্রথমে আলাদা কিছুই দেখা যায়নি। তবে দশদিনের মাথায় একটু আলোর সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। সামান্যই আলো। মাত্র একটি ফোটন কণা থেকে যতটা আলো আসতে পারে, ততটুকু। কিন্তু এটুকুই তো পুরো ছবিটাকে বদলে দিল। সারা পৃথিবী জুড়ে তখন ছড়িয়ে পড়লো একটি নাম। হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। আর তার ডিপ ফিল্ড ইমেজিং-এর কথা ফিরতে লাগল মানুষের মুখে মুখে।

পরবর্তীকালে আল্ট্রা ডিপ ফিল্ড, এক্সট্রিম ডিপ ফিল্ড ইমেজিং প্রযুক্তি এসে যাওয়ায় অনেকটাই পিছনে সরে গিয়েছে হাবলের নাম। কিন্তু মহাবিশ্বের এমন নানা খুঁটিনাটি বস্তুর সন্ধান দিয়েছে সে। কম দিন তো হল না, দেখতে দেখতে তিন দশক কেটে গেল। এই মাসের শেষেই হাবলের মহাকাশ আরোহণের ৩০ বছর পূর্ণ হবে। আর বিজ্ঞানের ইতিহাসের অনেক কথাই তাই মনে পড়ে যাচ্ছে নাসার বিজ্ঞানীদের।

১৯৯০ সালে প্রথম যখন মহাকাশে পারি দিল হাবল, কত আশা ছিল এই দূরবীনকে নিয়ে। কিন্তু হাবল যেন সেই সবকিছুতেই জল ঢেলে দিচ্ছিল। প্রথম দিকে তার পাঠানো প্রত্যেকটা ছবি পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছিল, সেগুলো ভুল। তবে ১৯৯৩ সালেই নতুন লেন্স বসানো হল এই দূরবীনে। সেইসঙ্গে ক্যামেরা পাল্টানো হল। আর তার পর থেকেই ক্রমশ একের পর এক বৈপ্লবিক আবিষ্কার ঘটিয়ে চলেছে এই দূরবীন। এখন আরো আধুনিক সব প্রযুক্তি এসে গিয়েছে। হাবল স্পেস টেলিস্কোপ যেন মহাকাশে এক বৃদ্ধ সদস্য। তবে একসময় তার চোখেই মহাবিশ্বের নতুন রূপ দেখেছেন বিজ্ঞানীরা।

More From Author See More

Latest News See More