বায়ু থেকেই সংগ্রহ করা যাবে পানীয় জল, যুগান্তকারী আবিষ্কার বাঙালি গবেষকদের

একদিকে জলের অপব্যবহার, দূষণ; অন্যদিকে উষ্ণায়নের দরুন আরও দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে পানীয় জলের আধার। বাড়ছে জল সংকটের আশঙ্কা। এবার তার সমাধান খুঁজতেই অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন গুয়াহাটি আইআইটির গবেষকরা। তৈরি করলেন সম্পৃক্ত বাতাসে উপস্থিত জলীয় বাষ্প থেকেই জল সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের পদ্ধতি।

গবেষক উত্তম মান্নার নেতৃত্বে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি জার্নালে। গবেষণায় যুক্ত ছিলেন একদল বাঙালি গবেষক। ছিলেন রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কৌশিক মাজি, অভিজিৎ দাস ও মণিদীপা ধর। উল্লেখযোগ্য এই গবেষণাকে ‘পাথ ব্রেকিং’ বলেই অভিহিত করেছে রয়্যাল সোসাইটি। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এই প্রক্রিয়া?

বর্ণনা দিতে গিয়ে গবেষকরা উদাহরণ হিসাবে বেছে নিয়েছেন পদ্ম পাতাকেই। পদ্মপাতায় হাইড্রোফোবিসিটির কারণে যেমন জলবিন্দু জমাট বেঁধে থাকে, সদ্য আবিষ্কৃত পদ্ধতি তৈরি হয়েছে সেই মডেলের অনুকরণেই। সাধারণ এ-ফোর কাগজের ওপরে তাঁরা প্রলেপ দিয়েছেন একটি বিশেষ ছিদ্রবহুল পলিমারের। তার ওপরে আরও দুটি স্বতন্ত্র জৈব তেলের প্রলেপ। যার রাসায়নিক চরিত্র মূলত উচ্চ-জলাকর্ষী। এই হাইড্রোফিলিক বৈশিষ্টের কারণেই আদ্র বায়ুর জলীয় বাষ্পকে শোষণ করতে সক্ষম রাসায়নিক প্রলেপটি। কুয়াশা, কিংবা সমুদ্র তীরবর্তী উচ্চ আদ্রতা বিশিষ্ট আবহাওয়ায় অনায়াসেই জল সংরক্ষণ করতে পারবে এই প্রযুক্তিগত ইন্টারফেস। 

পৃথিবীব্যাপী জলের চাহিদা মেটাতে অপ্রচলিত উপায়েরই সন্ধান চলছে দুনিয়াজুড়ে। আর সেই ক্ষেত্রে এই অভিনব আবিষ্কার যে বড়-সড় বিপ্লব আনতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। প্রধান গবেষক ডঃ মান্না জানান, পুরো প্রযুক্তিটির কার্যকারী দক্ষতাকে আরও বেশ খানিকটা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে এখন। এভাবে বড়ও মাপের মডেলেও এর ব্যবহারিক প্রয়োগের কথা ভাবছেন তাঁরা। তার জন্য যে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না, সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছেন তিনি...

Powered by Froala Editor

Latest News See More