আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরিতে মঙ্গলযাত্রার প্রস্তুতি

গত মার্চ মাসের কথা। দক্ষিণ-পশ্চিম আইসল্যান্ড কেঁপে উঠেছিল ভয়াবহ ভূমিকম্পে। না, সাধারণ কোনো ভূমিকম্প না। ৯০০ বছর পর মাথা চারা দিয়ে উঠেছিল রেকজানেস আগ্নেয় পর্বত। ৬ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর, এখনও সেখান থেকে অনবরত বেরিয়ে আসছে লাভার স্রোত। উল্লেখ্য, এটিই বিগত পাঁচ দশকের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অগ্নুৎপাতের ঘটনা। তবে এই ভয়াবহ অগ্নিকুণ্ডই এখন সাক্ষাৎ ল্যাবরেটরি গবেষকদের কাছে। পরবর্তী মঙ্গল অভিযানের (Mars Expedition) প্রস্তুতির জন্য রীতিমতো পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে আইসল্যান্ডের (Iceland) বুকে। 

হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। পৃথিবীর বুকে মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি। মাত্র কয়েক মাস আগের কথা। মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করেছিল নাসার পার্সিভারেন্স রোভার। সেইসঙ্গে প্রথমবারের জন্য মঙ্গলে পাঠানো হয়েছিল বিশেষ হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। মঙ্গলের প্রায় শূন্য ঘনত্বের বায়ুমণ্ডলে তা উড়তে সক্ষম হয়েছিল সফলভাবে। গবেষকদের দাবি, আগামীদিনে রোভারের বদলে এই ধরনের হেলিকপ্টারই আরও দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে মঙ্গলের বুকে। আর সেই জন্যই শুরু হয়েছে মঙ্গলের জন্য বিশেষ ড্রোন তৈরির জোরদার প্রস্তুতি।

প্রশ্ন থেকে যায়, এইসব ড্রোনের টেস্টবেড হিসাবে হঠাৎ আইসল্যান্ডকেই বেছে নেওয়া হল কেন? অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা প্ল্যানেটরি ভলক্যানোলজিস্ট ক্রিস্টোফার হ্যামিলটন জানাচ্ছেন, মঙ্গলের ভূ-প্রকৃতির সঙ্গে মিল রয়েছে আইসল্যান্ডের এই আগ্নেয় উপত্যকার। এই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বও অন্যান্য অঞ্চলের থেকে বেশ খানিক কম উষ্ণতা বেশি থাকার জন্য। আর সেই কারণেই ড্রোন পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে অঞ্চলটিকে।

বিগত চার মাসেরও বেশি সময় ধরে নানা রকমের বিশেষভাবে ড্রোনের পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে আইসল্যান্ডে। লেজার স্ক্যানিং থেকে শুরু করে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরার মাধ্যমে উষ্ণতা নির্ণয় করা হয়ে ভূগর্ভের। ড্রোনের সাহায্য জমাট বাঁধা লাভার ওপরেও চলছে ড্রিল করার পরীক্ষা। মাপা হচ্ছে তরল লাভার ঘনত্ব। সেইসঙ্গে ড্রোনের ওজন বাড়িয়ে মোটরের কর্মক্ষমতাও যাচাই করছেন গবেষকরা। 

আরও পড়ুন
হঠাৎ জেগে ওঠা আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণ, বিপন্ন সেন্ট ভিনসেন্ট দ্বীপ

প্রাথমিকভাবে যে সমস্ত ড্রোন আইসল্যান্ডের এই প্রকৃতিতে ক্লিনচিট পাবে তাদের পরিকাঠামো নিয়েই পরবর্তী স্তরের গবেষণা করবেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী, সাফল্য আসতে খুব বেশি দেরি নেই। আগামীদিনে হয়তো রোভারের জায়গায় স্থায়ীভাবে মঙ্গল অভিযানের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠবে ড্রোনই…

আরও পড়ুন
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে মৃত্যু প্রভু ও ক্রীতদাসের, ২০০০ বছর পর উদ্ধার দেহ!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
জীবন্ত আগ্নেয়গিরির মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে অসংখ্য হাঙর – আশ্চর্য দৃশ্য সলোমন দ্বীপে