আক্রান্ত প্রায় ২ কোটি, বিশ্বজুড়ে ত্রাস হয়ে উঠছে সেপসিস

সেপসিস। সারা বিশ্বের ভয়াবহ রোগগুলির মধ্যে অন্যতম। আর এই রোগেই বিশ্বের পাঁচজনের মধ্যে একজন মারা যাচ্ছেন। পৃথিবীর মতো আমাদের রক্তেও এই ‘দূষণ’ ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে। তা নিয়েই চিন্তিত চিকিৎসক সমাজ।

আমাদের দেহের একটি নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ করার শক্তি রয়েছে। বাইরের যাবতীয় রোগ জীবাণুর হাত থেকে আমাদের শরীরকে বাঁচায় সেটা। সেই ক্ষমতা কম হলেও যেমন খারাপ, বেশি হলেও মারাত্মক ক্ষতিকর। প্রতিরোধ করার জন্য আনুষঙ্গিক রাসায়নিক যখন খুব বেশি নির্গত হতে থাকে, তখনই তা অন্যান্য অঙ্গে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। তখনই দেখা যায় সেপসিস। রক্তের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে এটা।

মূলত ফুসফুসের সংক্রমণ-জনিত কারণ থেকেই এটা শুরু হয়। তবে একবার শুরু হলে, এটা ভয়ংকর প্রভাব রেখে যায়। মানুষের মৃত্যু তো হয়ই, ততটা না হলেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে। আর এই রোগ নিয়েই চিন্তায় বিশ্ব। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে ৫০ লাখের মৃত্যুও হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকিদের অবস্থাও সুখকর বা স্বস্তিদায়ক নয়। আরও শঙ্কার বিষয় হল, এই রিপোর্ট শুধুমাত্র পশ্চিমের দেশগুলোর ওপর করা হয়েছে। বিশ্বের উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা যোগ করলে, এই হিসেব আরও বাড়বে। শুধু আমেরিকাতেই বছরে ৪৮ লাখ মানুষ মারা যান। ১৯৯০ থেকে এই মৃত্যুর সংখ্যা কমতে আরম্ভ করলেও, খুব উল্লেখযোগ্য হারে কমেনি।

সময় মতো প্রতিষেধক এবং পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকাই এই রোগের প্রতিকার। সমস্যা হল, অনেক মানুষেরই এই ব্যবস্থা নেই। টিকা দেওয়ার পরিকাঠামোর অভাব, সেই সঙ্গে পরিবারের আর্থিক অবস্থান— সমস্ত দিক থেকেই জাঁকিয়ে বসেছে এগুলো। তাই উন্নয়নশীল দেশে, বিশেষ করে নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত সমাজে এর আক্রমণ সবচেয়ে বেশি। সেপসিস তাই আজ গোটা বিশ্বের কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছে।