‘শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি’, ভারত-চিন যুদ্ধে গানই হাতিয়ার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের

মাত্র কিছুদিন আগেই চিনা সৈনিকদের আচমকা আক্রমণে প্রাণ হারালেন কুড়ি জন ভারতীয় জওয়ান। চিরকাল শান্তিকামী ভারতের বিরুদ্ধে শান্তিবিরতি লঙ্ঘন করে চিনের এই আগ্রাসন বারবার মনে করিয়ে দেয় ষাটের দশকের প্রথমদিকের সেই ভয়াবহ দিনগুলিকে। প্রধানত হিমালয়ের বর্ডারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সেই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটের বীজ বপন করা হয়েছিল সম্ভবত ১৯৫৯ সালে তিব্বতীয় উত্থানের সময় থেকেই। তখন থেকেই সীমান্তে শুরু হয়ে গিয়েছিল ছোটো ছোটো লড়াই। সেইসময়ে চিন-ভারত রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে বর্তমানে জন্মশতবর্ষে উপনীত এক সঙ্গীতশিল্পীর ছায়াও মনে আসে খুব স্বাভাবিকভাবেই। তাঁর নাম হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। বরাবর শান্তিকামী এই আদ্যোপান্ত গান-মানুষটি হয়তো নিজের অজান্তেই যেন সেইসময়ের সংস্কৃতির ইতিহাসের সঙ্গে বেশ খানিকটা জড়িয়ে পড়েছেন। আজকের দিনে তাঁকে কেন্দ্র করে আলোচিত এই অতীতচারণ প্রাসঙ্গিকতার দাবি রাখে। গান তো বটেই, একটি ছায়াছবিও মূলত তাঁর হাত ধরেই শান্তির বার্তা তুলে ধরেছিল তৎকালীন সময়ে।

সালটা ১৯৫৬। 'এরা বটর সুর' নামের একটি অসমিয়া ছবির জন্য হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং লতা মঙ্গেশকরের গানের রেকর্ডিং করতে বম্বে গেছেন ভূপেন হাজারিকা। সেই সময়ই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে একদিন হিন্দি সাহিত্যিক মহাদেবী ভার্মা রচিত একটি ছোটোগল্প পড়ে শোনালেন তিনি। গল্পটির নাম 'বাহ চীনি ভাই' বা 'চীনি ফেরিওয়ালা'। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এই গল্পটি নিয়ে খানিকটা চিন্তাভাবনা শুরু করেন তখনই। রবীন্দ্রনাথের 'কাবুলিওয়ালা' গল্পের সাথে খানিক মিল থাকলেও এর মধ্যে একটা ট্যুইস্ট রয়েছে। হেমন্তবাবু ঠিক করলেন, এই গল্প নিয়ে একটি ছবি করবেন বাংলায়। স্ক্রিপ্ট লেখানো ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিলেন বন্ধু শান্তু মুখোপাধ্যায়ের হাতে, যাতে কলকাতায় এলে তিনি বাড়িতে এই গল্প অবলম্বনে লিখিত স্ক্রিপ্টটি শুনতে পারেন।

স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য শান্তুবাবু যোগাযোগ করলেন মৃণাল সেনের সঙ্গে। হেমন্ত কলকাতায় এলে, শান্তি মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসে স্ক্রিপ্ট শোনালেন মৃণাল সেন। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি 'রাতভোর' তখন সুপার ফ্লপ। সেই স্ক্রিপ্ট শুনে কিন্তু হেমন্তবাবুর পছন্দ হল না! প্রথমত, মৃণাল সেন গল্পের বেশিরভাগ অংশেরই ঘটনা সাজিয়েছেন চিনে। অর্থাৎ, শ্যুটিং করতে হলে চিনে যেতে হবে যা তখনকার দিনের প্রথম প্রযোজনায় নামা একজন প্রডিউসারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, স্ক্রিপ্টের ধরণ রেডিওর নাটকের মতন। মৃণালবাবুকে বলতে তিনি বললেন যে, পরে হেমন্তবাবুর কথামতন উনি স্ক্রিপ্ট লিখে দেবেন। সেই স্ক্রিপ্টটা নিজের কাছে রেখে দিলেও হেমন্তবাবু সেইসময়ের প্রখ্যাত চিত্রনাট্য লেখক নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতায় নতুন চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করতে বললেন। ঠিক করলেন উত্তমকুমার ও অরুন্ধতী দেবীকে নিয়ে ছবিটি করবেন এবং ফিরে গেলেন বম্বেতে। মাসখানেকের মধ্যে শান্তুবাবুর টেলিগ্রাম এল, উত্তমকুমার চিনা মেক-আপের জন্য এক ঘণ্টাও সময় দিতে পারছেন না। ফলে বন্ধ হল ছবির কাজ। পরে বন্ধুই বললেন, মৃণালবাবু্র প্রথম চিত্রনাট্য মনোমত না হলেও তাঁর চিন্তাভাবনার গভীরতা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। পরেরবার কলকাতায় এসে নিজেই গল্পের খসড়া তৈরি করতে বসলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বন্ধুর সঙ্গে। ডেকে পাঠালেন আবার মৃণাল সেনকে। বললেন, বম্বেতে গিয়ে সাতদিনের মধ্যে পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে পারলে ছবিটি তৈরি হতে পারে। তাই হল। সাতদিনের মধ্যে মৃণালবাবুর তৈরি নতুন স্ক্রিপ্ট শুনে খুব খুশি হলেন হেমন্ত! সবাই মিলে ঠিক করলেন পরিচালনার ভার দেওয়া হবে মৃণাল সেনকেই।

কিন্তু সমস্যা হল চিনা-অভিনেতা নিয়ে। ভারত-চিন সম্পর্ক তখনও মোটামুটি ভালো। হেমন্ত ছুটলেন বম্বের চিনা কনস্যুলেটে - যদি পিকিং থেকে অভিনেতা আনা যায়। কিন্তু চিন থেকে অভিনেতা আনতে অসুবিধা হবে শুনে মৃণাল সেন বললেন কালী ব্যানার্জীর কথা, নায়িকা ঠিক করা হল মঞ্জু দেকে। ধাপার এলাকা থেকে একটি চিনা মেয়ে এবং কলকাতার চিনে পাড়া থেকে আনলেন কয়েকজন অভিনেতা - লিয়াও তাই শেং, ইয়ং চিন তিয়েন, লিউ চ্যাং চিং, ই সও ওয়েন সহ অনেককে। সম্ভবত এই প্রথম বাংলা ছবিতে এতজন চিনা অভিনেতা একসঙ্গে কাজ করলেন। সমস্যা এখানেই শেষ নয়। প্লাস্টার দিয়ে মেক-আপ করাতে মৃণালবাবু ব্যর্থ হলে, কালী ব্যানার্জী ও রূপসজ্জাকর শক্তি সেনকে সঙ্গে নিয়ে হেমন্ত গেলেন মাদ্রাজে, পূর্বপরিচিত মেক-আপম্যান হরি চন্দ্রর কাছে। তিনি নিজের বাড়িতেই আধঘণ্টার মধ্যে কালী ব্যানার্জীর মেক-আপ করে দিলেন এবং তাঁর স্টিল ফটো নিলেন হেমন্ত, যেটি দেখেই পরে মেক-আপ করেছিলেন শক্তি সেন এবং অনন্ত দাশ। এরপর শুরু হল পুরোদমে শ্যুটিংয়ের কাজ।

১৯৩০ সালের উত্তপ্ত কলকাতার প্রেক্ষাপট। এক চিনা ফেরিওয়ালা ওয়াং লূ এসেছেন এক কংগ্রেস-নেত্রীর বাড়িতে শাড়ি বিক্রি করতে। 'বিদেশি' জিনিস কিছুতেই কিনবেন না পণ করে থাকা ভদ্রমহিলাকে নাছোড় ফেরিওয়ালা বোঝাতে চায় যে, সে বর্জনীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিধারী জাতির একজন অর্থাৎ ব্রিটিশ নয়, সে চিনা। তার গায়ের রঙ ও চোখের রঙের সঙ্গে মিল আছে ভারতীয়দের। ধীরে ধীরে এই কেনাবেচার সম্পর্ক হয়ে ওঠে স্নেহ-মমতায় মাখা ভাই-বোনের সম্পর্ক, হারিয়ে যাওয়া বোনকে ওয়াং খোঁজে ভদ্রমহিলার মধ্যে, ডাকে 'সিস্টার' সম্বোধনে। পুলিশের হাত থেকে 'সিস্টার'কে বাঁচাতে চায় কাগজপত্র লুকিয়ে রেখে, কিন্তু শেষরক্ষা হয় না, গ্রেপ্তার হন ভদ্রমহিলা। জেলের আশেপাশে ঘুরতে থাকে ওয়াং, 'সিস্টারে'র দেখা না পেয়েই কেটে যায় বেশ কয়েকবছর। অবশেষে একদিন বাড়ি ফেরেন তিনি, তার অনুমতি নিয়েই ওয়াং চলে যায় চিনে, আক্রান্ত চিন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। এই গল্পেরই দৃশ্যরূপ 'নীল আকাশের নীচে'। ‘হেমন্ত-বেলা প্রোডাকশন’-এর নামে সঙ্গীত-পরিচালনার পাশপাশি প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন হেমন্ত এই ছবির হাত ধরেই। পরিচালনায় রইলেন মৃণাল সেন। সম্ভবত এই প্রথম সর্বভারতীয় স্তরের কাহিনি নিয়ে তৈরি হল একটি আন্তর্জাতিক ছবি। ছবির মিউজিকও তৈরি করলেন হেমন্ত আন্তর্জাতিক স্তরেই। কলকাতার পথে চিনা ফেরিওয়ালার হেঁটে যাবার দৃশ্যে সঙ্গীত-পরিচালক ব্যবহার করলেন চিনের 'ইয়য়ে' ধারার মিউজিক, যার সঙ্গে মিশেছে ভারতীয় সুরের ধাঁচও। চিনা-নববর্ষের উৎসবের নেপথ্যে ব্যবহার করলেন চিনা 'জ্যাজ' মিউজিক। ভারতীয় ছবিতে চিনা মিউজিকের ব্যবহারও বোধহয় সেই প্রথম।

এ ছবির দুটি গানও ছবির সম্পদ। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার রচিত এই গানদুটি চিত্রনাট্যের সঙ্গে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক থেকেও কীভাবে যেন হয়ে ওঠে সর্বজনীন। পথে হেঁটে চলা এক চিনা ফেরিওয়ালার ব্যক্তিগত আবেগের পরিস্ফুটন থেকে ‘ছোট ছোট মানুষের ছোট আশা’র প্রতিচ্ছবি নিয়ে দেশ, জাতি ও সংস্কৃতির ভেদরেখা অতিক্রম করে একটি সার্থক গণসঙ্গীত হয়ে ওঠে ‘নীল আকাশের নীচে’ গানটি। যুদ্ধবিগ্রহে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হাহাকার-ধ্বনিও কান পেতে শোনা যায় না কি? দেশচ্যুত চিনাম্যানের সঙ্গে নদীর প্রবহমানতা যখন একাকার হয়ে যায় ঘাটে বসে থাকার মুহূর্তে, তখন নদীকে শুধানো কথাগুলি একজন ভারতীয় বলছেন না বলছেন একজন চিনাম্যান - তা বোঝা বড় কঠিন হয়ে পড়ে। ‘ও নদীরে’ গানটি রেকর্ড করার পর হেমন্তবাবু বেরিয়ে যাবার মুহূর্তেই দেখা যায়, শেষে বাজাতে গিয়ে একটি কর্ড পড়ে গেছে। শিল্পী ও সুরকার তখন বললেন যে জায়গাটা ফেড আউট করে ছড়িয়ে দিতে এবং তার ফলে একটা সূক্ষ্ম চাইনিজ রিদম চলে আসে তাতে। উত্তরবঙ্গে শ্যুটিংয়ের দরুণ ‘ও নদীরে’ গানটিতে স্থানীয় ফোক টিউনের সঙ্গে চিনা-বোটম্যানদের নৌকা-বাওয়ার চিত্রায়নে চাইনিজ মিউজিকের আভাস এসে পড়ে, এটা সুরকার জেনেশুনেই করেছিলেন বোঝা যায়। মৃণাল সেন কিন্তু ছবিতে গান রাখতেই চাননি প্রথমে, সুরকার ও প্রযোজকের স্বার্থেই শেষমেশ রাজি হন। ছবিতে কোথায় কোথায় গান থাকতে পারে, তা ভেবে বের করেছিলেন হেমন্তই।  

আরও পড়ুন
শহরজুড়ে দাঙ্গা; কলিম শরাফীকে লুকিয়ে রাখলেন দেবব্রত বিশ্বাস, জানতে দেননি হেমন্তকেও

সাম্রাজ্যবাদী নৃশংসতার বিরুদ্ধে দেশাত্মবোধের স্রোতপ্রবাহের মাঝে মানবতা ও ভালবাসার লড়াইয়ের সঙ্গে আবহসঙ্গীত ও গানের মিশেল, এবং ছবি তৈরির নেপথ্য কাহিনি সার্বিকভাবেই ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবিটিকে করে তোলে ঐতিহাসিক। তবে, সেন্সর কিন্তু মুক্তি দিল না ছবিটিকে। ছবিতে নাকি কমিউনিস্ট ভাবনা চিন্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। হেমন্তর মাসতুতো বোন মুকুল ব্যানার্জী মারফত শেষমেশ রাষ্ট্রপতি ভবনে স্পেশাল স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থা করে ছবিটি দেখানো হল পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজেন্দ্রপ্রসাদ এবং আরও অনেককে। পুরো ছবি দেখে নেহেরু পরিচালক ও প্রযোজককে বললেন, ‘ইউ হ্যাভ ডান আ গ্রেট সার্ভিস টু দ্য নেশন’। বাধা কেটে যায়। আগামীতে ইন্দো-চিন সম্পর্কের অবনতি আন্দাজ করে হেমন্ত শীঘ্রই ছবিটি রিলিজ করার ব্যবস্থা করেন। ১৯৫৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ‘নীল আকাশের নীচে’। চিরকালই শান্তিকামী ভারতবর্ষের হয়ে কথা বলেছিল এই ছবি, যদিও শেষমেশ যখন ভারত-চিন যুদ্ধ ঘটে ১৯৬২ সালে, তখন এই ছবির প্রদর্শন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

ভারত-চিন সম্পর্কের মধ্যে সাধারণ মানুষের স্তরে মানবতাবাদী, বিশ্বায়িত বোধের বিষয়ে যে উদারমনস্ক শিল্পী এতখানি সচেতন ছিলেন, তিনি কিন্তু ১৯৬১-তে ভারত-চিন যুদ্ধের আবহে দেশের স্বার্থে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে ভোলেন না। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় ও নিজের সুরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আকাশবাণীতে রেকর্ড করেন দুটি দেশাত্মবোধক গান – “মাগো ভাবনা কেন” এবং “এ দেশের মাটির ‘পরে”। ভারতমাতার ছেলেরা চিরকালই শান্তিপ্রিয়। কিন্তু শত্রু এলে প্রাণ হাতে নিয়ে অস্ত্র হাতে যোগ্য জবাব দিতে তারা পিছপা হন না – এক বাঙালি গায়কের কণ্ঠে তাঁর মাতৃভাষায় রচিত এই গান অচিরেই বাঙ্গালির 'জাতীয় সঙ্গীত' হয়ে ওঠে যেন - বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই গান নতুন করে প্রাণ সঞ্চার করে জাতির জীবনে। জন্মভূমির মাটির একটি কণাও না ছেড়ে দেবার শপথ সার্বিকভাবেই দেশাত্মবোধক চেতনা ঢেলে দিতে সক্ষম হয়েছিল সাধারণ জনমানসে। দেশ-বন্দনার মধ্যে দিয়েই বিপ্লবী-সত্ত্বার সার্থক অনুরণন ঘটেছে “এ দেশের মাটির 'পরে” গানটিতে। ইন্দো-চিন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এমন সার্থক দেশাত্মবোধক ঐতিহাসিক গানের জন্মও দিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।

শুধু কি তাই? ১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্যার্থে অর্থ-সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাদের সাহায্যেই ইডেনের মাঠে শিল্পীদের ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। আহত জওয়ানদের দেখতে যেতেন তিনি, তাদের পাশে দাঁড়াতেন সাধ্যমতো।

আরও পড়ুন
‘দাস্তাঁ আগে অওর ভি হ্যায়’: গীত, গজল এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়

আজকের চিন-ভারত সম্পর্কের সাময়িক অবনতিতেও স্বাভাবিকভাবেই মনে আসে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রাসঙ্গিকতা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ছিলেন সারা ভারতবর্ষের একদেহী রূপ। চিরকালই শান্তিকামী ভারতবর্ষের মতই তিনিও সমস্তরকম হিংসার বিরোধিতা করেছেন গানে-গানে। তবে যেখানে নেমে এসেছে অতর্কিতে নিষ্ঠুর একপাক্ষিক আঘাত, সেখানে নিজের গানেই দেশের মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধ চেতনা জাগিয়ে তুলতে পিছপা হননি হেমন্ত। পরিশেষে একটা কথাই বলার, আমরা সকলেই যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। আন্তর্জাতিক স্তরে ‘শান্তির ললিত বাণী’ কি দেশাত্মবোধের ভাবনা-আশ্রয়ে তাঁর মতই আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি না মানবসমাজে? আজকের এই সময়ে দুই দেশের পক্ষে এইটুকুই যেন হয় আমাদের লক্ষ্য, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই নয়।  

তথ্যসূত্রঃ

১) 'আনন্দধারা' - হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক - অভীক চট্টোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি প্রকাশন, ২০১৩

আরও পড়ুন
মৃত্যুর পরই যেন সম্প্রচারিত হয় এই গান, আকাশবাণীকে নির্দেশ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের

২) 'ষাট পেরিয়ে অমলিন নীল আকাশের নীচে' - ডঃ পৃথা কুণ্ডু, একদিন, নবপত্রিকা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

Powered by Froala Editor

More From Author See More