বিশ্ব শিল্প দিবস উপলক্ষে বিশেষ চারুকলা প্রদর্শনী জাদুঘরে, কলকাতায় এই প্রথম

রেনেসাঁর অন্যতম কালজয়ী চিত্রশিল্পী হিসাবেই বিশ্ববন্দিত লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। শুধুই কি চিত্রশিল্প? ভাস্কর্য, স্থাপত্য, সঙ্গীত— শিল্পের প্রতিটি আঙ্গিকই স্পর্শ করে গেছেন তিনি। এমনকি আজকের সময়ের বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্যেও অন্যতম অবদান রয়েছে তাঁর। আর সেই কারণেই এমন এক ব্যক্তিত্বের জন্মদিন বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শিল্প দিবস হিসাবে। তবে এতদিন ব্রাত্য থেকে গিয়েছিল কলকাতা। এবার এই প্রথম ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানীতেও বিশেষভাবে পালিত হল ওয়ার্ল্ড আর্ট ডে।

ক্যালেন্ডারের পাতায় দিনটা ১৫ এপ্রিল। বাঙালির নববর্ষ। আর সেই কারণেই হয়তো আনন্দ-উৎসবের ভিড়ে চাপা পড়ে যায় দিনটির আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ আঙ্গিক। সেই গণ্ডি পেরিয়েই এবার উদ্যোগ নীল ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। বাংলা বছরের প্রথম দিনে, ইউনেক্সো এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ আর্টের তত্ত্বাবধানে কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে আয়োজিত হল বিশেষ অনুষ্ঠান।

“বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। আসলে মহামারীর কারণে অধিকাংশ এগজিবিশনই এখন অনলাইনে হচ্ছে। দর্শকরা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে চিত্রশিল্পীদের সঙ্গে একটা যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারেন যাতে, সেই উদ্দেশ্যেই এই অনুষ্ঠানটা আয়োজন করা হয়েছিল”, জানালেন পার্ফেকশন ক্রিয়েটিভসের সদস্য অঙ্কিত বাগচী।

আরও পড়ুন
এক দশকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পারকিনসনের, দায়ী শিল্পক্ষেত্রের বর্জ্য

আরও পড়ুন
চলমান ট্রামেই জাদুর প্রদর্শনী, শীঘ্রই পথে নামবে ম্যাজিক ট্রাম

হ্যাঁ, করোনাকালে শিল্পচর্চার বিষয়টিকে মাথায় রেখেই এদিন আয়োজিত হয়েছিল বিশেষ চারুকলা প্রদর্শনী। উপস্থিত ছিলেন শিল্প বিশেষজ্ঞ শ্রী মৃণাল ঘোষ, আইএএ সভাপতি মনোজ সাহা, অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র সমালোচক ডঃ সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ মাইতি, দেবব্রত চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র নির্মাতা অর্জুন চক্রবর্তী-সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব। প্রদর্শিত হয় শিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, প্রদীপ মৈত্র, সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত ভর, সুব্রত কর, সুব্রত দাস, সমীর সরকারের নানা শিল্প সৃষ্টি। আয়োজন করা হয়েছিল লাইভ পেন্টিং, মার্গ সঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান।

আরও পড়ুন
এবার চলন্ত ট্রামেই শিল্প প্রদর্শনী, নবাগত শিল্পীদের পাশে রাজ্যের পরিবহন সংস্থা

অঙ্কিতবাবু জানালেন, “লাইভ আর্ট, মানে চোখের সামনে ক্যানভাস-রঙের উপস্থিতিও মানুষের মনবিকাশে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন রঙের মিশেল দেখে যে অনুভূতি হয়, তা ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পূর্ণ পাওয়া যায় না। সেই শিল্পমনস্কতা ফেরাতেই এমন উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।” জানা গেল, শুধু বিশেষ দিনই নয়, শিল্পচর্চাকে বাঁচিয়ে রাখতে আগামীতেও এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে কলকাতার বুকে। সব মিলিয়ে বিশ্ব শিল্প দিবসের দিন যেন নতুন করে শিল্পচর্চার সংকল্প নিল তিলোত্তমা। সাক্ষী থাকল এক অনন্য সন্ধ্যার…

Powered by Froala Editor

More From Author See More