এশিয়ার প্রথম দৃষ্টিহীন এভারেস্টজয়ী

মনের জোর থাকলে স্বপ্নপূরণের সামনে কোনোকিছুই প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু যে ব্যক্তি চোখে কোনোকিছুই দেখতে পারেন না, তাঁর পক্ষেও কি পর্বতজয় করা সম্ভব? কীভাবে একের পর এক বাধা টপকে উঁচু থেকে আরও উঁচুতে পৌঁছে যাবেন তিনি? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন জ্যাং হং। চিনের এই পর্বতারোহী সম্প্রতি জয় করেছেন মাউন্ট এভারেস্ট। হ্যাঁ, যে সে পর্বত নয়, একেবারে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন এক দৃষ্টিহীন ব্যক্তি। এশিয়ার মধ্যে তিনিই প্রথম দৃষ্টিহীন এভারেস্টজয়ী।

জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন ছিলেন না জ্যাং হং। তবে কৈশোরেই তাঁর চোখে গ্লুকোমা ধরা পড়ে। ২১ বছর বয়সে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যান জ্যাং। কিন্তু ততদিনে তাঁর মনে এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দানা বেঁধেছে। বিশেষ প্রশিক্ষণের সাহায্যে ছোটোখাটো পাহাড়ে ওঠা চলতে থাকল। কিন্তু এভারেস্টে ওঠা কি মুখের কথা? এর কয়েক বছর পরে, ২০০১ সালে এভারেস্ট জয় করলেন এরিখ ওয়েহেনমায়ার। এই দৃষ্টিহীন মার্কিন পর্বতারোহীর সাফল্য জ্যাং-কে আরও অনুপ্রাণিত করল। এরিখ পারলে তিনিই বা পারবেন না কেন? জ্যাং-এর কথায়, অনেকে তো হাত-পা হারিয়েও এভারেস্ট জয় করেছেন। তিনি দুটো চোখ হারিয়েই বা পারবেন না কেন?

দীর্ঘ প্রস্তুতির পর গতবছরই এভারেস্ট অভিযানে বেরিয়ে পড়ার কথা ছিল জ্যাং-এর। কিন্তু করোনা অতিমারীর জন্য নেপাল সরকার পর্বতারোহণ বন্ধ করে দেয়। অবশেষে গত এপ্রিলে সেই দরজা আবার খুলে যায়। তিনজন পথপ্রদর্শককে সঙ্গী করে রওয়ানা হলেন জ্যাং। গত ২৪ মে তিনি পা রাখলেন এভারেস্টের চূড়ায়। এশিয়ার প্রথম এবং সারা বিশ্বের তৃতীয় দৃষ্টিহীন এভারেস্টজয়ী তিনি। দুর্গম প্রাকৃতিক পরিবেশে কখনও ভয় পেয়েছেন, কখনও পা টলে গিয়েছে। তবুও থেমে যাননি তিনি। স্বপ্নের জোরে যে সমস্ত অসাধ্য সাধন করা যায়, সেই কথাই আবারও প্রমাণ করলেন জ্যাং হং।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
দ্রুততম মহিলা পর্বতারোহী হিসেবে এভারেস্ট জয় চিনের শিক্ষিকার