বিশ্ব সেইলিং চ্যাম্পিয়নশিপে তাক লাগালেন ভারতীয় কিশোর

বছর পাঁচেক আগের কথা। ২০১৭ সাল। দোরগোড়ায় তখন রেগেতা সাবজুনিয়র আন্তর্জাতিক সেলিং চ্যাম্পিয়নশিপ। পুরো দমেই চলছে প্রস্তুতি, অনুশীলন। তারই মধ্যে হঠাৎ ভয়ঙ্কর চোট পেল ভারতের খুদে প্রতিনিধি। পায়ের লিগামেন্টে বড়োসড় আঘাত। ভর্তি হতে হল হাসপাতালেও। কিন্তু তার উদ্যম দমাবে, এমন সাধ্য কার? সেই চোট নিয়েই সেদিন ক্রীড়াক্ষেত্রে নেমেছিল দ্বাদশ বর্ষীয় কিশোর। ভারতকে এনে দিয়েছিল রৌপ্যপদক। 

পাদিদালা বিশ্বনাথ। সেদিনের সেই খুদেই এবার ভারতের ইয়াচিং-এর জুনিয়র দলের প্রতিনিধিত্ব করলেন বিশ্ব সেইলিং চ্যাম্পিয়নশিপে। গত ৩০ জুন শুরু হয়েছিল ইতালির রিভা দেল গার্ডায় আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা। শেষ হল গতকাল। সাফল্য আসেনি ঠিকই। তবে প্রথম দশের মধ্যে না থাকলেও, ভারতীয় তরুণের লড়াকু মেজাজ মন জিতে নিল দর্শকদের।

তবে বিশ্বনাথের এই উত্থান এককথায় রূপকথার মতোই। দারিদ্রের সঙ্গে ক্রমশ লড়াই করেই আজ সে বিশ্বের মঞ্চে। একুশ শতকের একেবারে শুরুর দিকের কথা। উপার্জনের আশায় সূর্যাপেট থেকে হায়দ্রাবাদে চলে এসেছিলেন বিশ্বনাথের বাবা-মা। দৈনিক মজুরির সামান্য চাকরি। হায়দ্রাবাদেই জন্ম বিশ্বনাথের। বেড়ে ওঠা সেখানেই। কখনো জুটত না দু’বেলা দু’মুঠো ভাত। সেইসঙ্গে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছোট্ট ঘরে দিনযাপন। 

তবে আর্থিক পরিস্থিতি কখনোই প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়নি তার কাছে। একেবারে ছোটোবেলা থেকেই সেইলিং-এ দক্ষতা অর্জন করেছিল তামিল কিশোর। স্কুলে পড়াকালীন সময়েই তার অভিষেক হয় ক্রীড়াক্ষেত্রে। সেসময় জেলাভিত্তিক প্রতিযোগিতায় এই কিশোর প্রতিভাকে চিহ্নিত করেন আইপিএস আর এস প্রভিন কুমার। তিনিই বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। তারপর গোয়ায় আইএনএস মান্ডোভির নেভি স্কুলে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। বছর কয়েকের মধ্যেই একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক পকেটস্থ করেছিল বিশ্বনাথ। 

আরও পড়ুন
স্বপ্ন থামতে দেননি শ্রমিক দিদা, দারিদ্রকে হারিয়ে অলিম্পিকে নাতনি রেবতী

বিশ্বনাথের সেইলিং বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ লড়তে যাওয়া এই প্রথম। ইতালির রিভা দেল গার্ডার সাফল্য এল না ঠিকই, কিন্তু এতটুকুও কমেনি তার উদ্যম। বরং, তা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে খুদে তারকার লড়াই করার মানসিকতাকে…

আরও পড়ুন
দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে টোকিও অলিম্পিক, জরুরি অবস্থা জারি জাপানে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পদকজয়ের স্বপ্ন নিয়ে অলিম্পিকে তামিলনাড়ুর পুলিশ কনস্টেবল