১৮৫ বছর পর খুঁজে পাওয়া গেল ‘হারিয়ে যাওয়া’ গাছ

রাস্তার ধারে একটি ছোট্ট শিবমন্দির। তার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে একটি গাছ। এমনটা তো প্রায় ভারতের সব জায়গাতেই দেখা যায়। গাছের গায়ে কেউ মনোবাঞ্ছা পূরণের অন্য সুতো বেঁধে রেখেছেন, কেউ আবার তেল-সিঁদুর লেপে দিয়ে গেছেন। কিন্তু ভক্তদের কেউই বুঝতে পারেননি, গাছটি সাধারণ কোনো গাছ নয়। এটি এমন এক বিরল প্রজাতির গাছ, যাকে শেষ দেখা গিয়েছিল ১৮০ বছরেরও বেশি আগে। হ্যাঁ, এমনই আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে কেরালার কোল্লাম জেলার পারাভুর গ্রামে। আর স্বাভাবিকভাবেই এই আবিষ্কারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে উদ্ভিদ-বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম মধুকা ডিপ্লোস্টেমন। ১৮৩৫ সালে পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় প্রথমবার তার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। সেই প্রথম এবং শেষবার। আর কোনোদিন তার অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হার্বেরিয়ামের নমুনা না থাকলে হয়তো অনেকেই মনে করতেন বিশ্লেষণে কোনো ভুল থেকে গিয়েছে। তবে এবার আর শুধুই সংগ্রহ করা নমুনা নয়, আস্ত একটি গাছ প্রমাণ করল তার অস্তিত্ব। জওহরলাল নেহেরু ট্রপিক্যাল বোটানিক গার্ডেন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা আপ্লুত এই গাছের সন্ধান পেয়ে।

১৮৩৫ সালে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী রবার্ট হোয়াইট পশ্চিমঘাট পর্বতের জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে এই নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু সেবার তিনিও ভুল করেছিলেন অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতোই। তিনি এই গাছটিকে ডায়োস্পাইরোস ওবোভাটা বলে মনে করেছিলেন। ১৯৬০ সালে বিজ্ঞানী পি রয়েন নমুনাটিকে নতুন একটি প্রজাতি বলে শনাক্ত করেন। নাম রাখেন মধুকা ডিপ্লোস্টেমন। তবে এর পর আর কখনোই তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে উদ্ভিদবিজ্ঞানের জগতে এমন একটা আবিষ্কার সত্যিই আশ্চর্যজনক। সেইসঙ্গে প্রয়োজন গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখাও। গবেষকরা অবশ্য জানিয়েছেন ইতিমধ্যে এক্স-সিটু সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

Powered by Froala Editor