গ্রামবাসীরাই প্রযোজনায় তৈরি ‘দুধপিঠের গাছ’, বিনিয়োগ ফেরাতে ভরসা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম?

“মানুষ কোন সিনেমা দেখবেন সেটা তো পুরোপুরি তাঁদের হাতে থাকে না। ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটারদের একটা বড়ো ভূমিকা থাকে। আমাদের সিনেমা মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই অনেক হল থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রানাঘাট, কৃষ্ণনগরের হলগুলো পেলে আরও অনেক মানুষ দেখতে পারতেন।” স্পষ্ট আক্ষেপের সুর ‘দুধপিঠের গাছ’ সিনেমার পরিচালক উজ্জ্বল বসুর কথায়। কিন্তু এর মধ্যেও যে কিছু দর্শক সিনেমাটি দেখার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা আপন করে নিয়েছেন সিনেমাটি। আর তাই ৪০ দিন পেরিয়ে আজও সফলভাবে চলছে ‘দুধপিঠের গাছ’। “দর্শকদের ভালো লাগছে বলেই আসছেন। তাঁদের ধন্যবাদ।” বললেন পরিচালক।

আড়ংঘাটার গ্রামীণ জীবন নিয়ে তৈরি সিনেমা। প্রযোজনা করেছেন গ্রামের মানুষরাই। কিন্তু আশেপাশের কোনো হলেই জায়গা পায়নি ‘দুধপিঠের গাছ’। যদিও প্রথমদিনের প্রিমিয়ার হয়েছিল গাছতলায় স্ক্রিন টাঙিয়েই। কিন্তু আশেপাশের নানা গ্রামের মানুষরা সিনেমাটি দেখতে পেলেন না। পরিচালকের কথায়, “ট্রেনও চালু হল অনেক পরে। তবুও আসছেন অনেকে।” এই সিনেমা যে আসলে তাঁদের সকলের। নন্দনের মতো প্রেক্ষাগৃহে প্রথমে জায়গা পায়নি ‘দুধপিঠের গাছ’। কিন্তু পরে জায়গা পাওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা প্রত্যেকেই। তবে পরিচালকের মাথার উপরে এখন আরও একটি দায়িত্ব।

সিনেমা মুক্তি পাওয়ার আগে উজ্জ্বল বসু জানিয়েছিলেন, গ্রামবাসীদের পরিশ্রমের টাকায় তৈরি সিনেমা। সফল হলে তাঁদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাঁদেরই। উজ্জ্বল বসুর কথায়, “সেই জন্যই ছবিটি মুক্তির ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করেছিলাম। একসঙ্গে অনেক ছবি মুক্তি পেলেও পিছিয়ে আসিনি।” তবে এর পরেও আশানুরূপ ফল এল না। “৬ সপ্তাহ ধরে সিনেমা চলছে ঠিকই, কিন্তু সিনেমা হল থেকে আর্থিক লাভ তেমন মিলল না।” শুধু ‘দুধপিঠের গাছ’ নয়, কোনো সিনেমাই সেভাবে আর্থিক লাভের মুখ দেখেনি। একসঙ্গে এত ছবি মুক্তি পেল, কিন্তু বেশিরভাগই হারিয়ে গেল কিছুদিনের মধ্যেই। ‘দুধপিঠের গাছ’ এখনও চলছে। কিন্তু তার থেকে যা উপার্জন হয়েছে তাতে এখনই গ্রামবাসীদের সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন উজ্জ্বল বসু। তাহলে উপায়? “ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কথাও ভেবেছি আমরা। দেখা যাক তাতে আর্থিক লাভ হয় কিনা।” কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতির শেষে প্রেক্ষাগৃহগুলি খুলে যাওয়ায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি খানিকটা অক্সিজেন পাবে বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। সেই আশা আদৌ পূরণ হল কি? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Powered by Froala Editor