বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য খোদ রেফারির, স্থগিত হল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘কলঙ্কিত’ ম্যাচ

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হোক বা নেশনস কাপ— উয়েফার যেকোনো টুর্নামেন্টেই বারবার উঠে আসে সাম্যের কথা। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দেখা যায় ‘সে নো টু রেসিজম’ কিংবা ‘নো রুম ফর রেসিজম’ পোস্টার। এবার সেই প্রবাদপ্রতিম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচেই ঘটে বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা। অভিযোগের আঙুল উঠল খোদ ম্যাচ অফিশিয়ালদের দিকে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরলতম ঘটনার সাক্ষী থাকল ফুটবল দুনিয়া।

গতকাল পিএসজি এবং ইস্তানবুল বাসাকসেহির ম্যাচ চলাকালীন সূত্রপাত হয় বিতর্কের। ম্যাচের বয়স তখন ২০ মিনিটও পার হয়নি। নক আউট পর্বের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিল ইস্তানবুল। অন্যদিকে টিকে থাকার মরিয়ে লড়াই করতেই মাঠে নেমেছিল পিএসজি। এমন হাই ভোল্টেজ ম্যাচে ১৪ মিনিটের মাথাতেই ইস্তানবুলের অ্যাসিস্টেন্ট কোচ পিয়েরে ওয়েবো সাইডলাইনের কাছে চলে আসায় লাল কার্ডের নির্দেশ দেন রোমানিয়ান চতুর্থ রেফারি সেবাস্তিয়ান কোটলেস্কু। সেই মতো প্রধান রেফারি লাল কার্ড দেখিয়ে ম্যাচ থেকে বহিষ্কারও করেন প্রক্তন ক্যামারুনের খেলোয়াড় ওয়েবোকে।

তবে এই ঘটনার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ম্যাচের পরিস্থিতি। অভিযোগ ওঠে কৃষ্ণাঙ্গ ওয়েবের উদ্দেশ্যে চতুর্থ রেফারি আপত্তিজনক মন্তব্য করেন রেডিও-তে। ইস্তানবুল ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানান একাধিক আধিকারিক ও ইস্তানবুলের খেলোয়াড়রা। পিছিয়ে ছিলেন না পিএসজির ফুটবলাররাও। নেইমার, এম্বাপে, ডেম্বা বে-র মতো তারকা ফুটবলার ম্যাচ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। 

পরিস্থিতি আয়ত্তে আতনে মূল রেফারি হেটগান বাধ্য হয়েই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন ম্যাচ। তবে হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি উয়েফা কর্তৃপক্ষ। চার রেফারি বদলের শর্ততে রাজি হয় ইউরোপের অন্যতম ফুটবল-সংস্থা। ৪৫ মিনিট পর নতুন অফিশিয়ালদের নিয়ে পুনরায় শুরু হয় ম্যাচ। উয়েফার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েই বাকি ৭৬ মিনিটের জন্য মাঠে নামের দুই দলের ফুটবলাররাই। সেইসঙ্গে দ্রুত তদন্ত এবং জেরার মাধ্যমে এই ঘটনার নিষ্পত্তি করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেছে উয়েফা। তবে এই ঘটনা যেন আরও একবার মনে করিয়ে দিল এত কিছু উদ্যোগের পরেও বর্ণবৈষম্যের ছায়া বিন্দুমাত্র সরেনি ফুটবলের অন্দরমহল থেকে... 

Powered by Froala Editor