অগ্নিকাণ্ড থেকে প্রতিবেশীদের বাঁচিয়ে ‘দেবদূত’ ক্যানসার-আক্রান্ত বৃদ্ধ

একসময় লড়াই করেছিলেন দেশের জন্য। বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গেই এখন ক্রমাগত লড়াই করে যেতে হচ্ছে ক্যানসারের সঙ্গে। কিন্তু চোখের সামনে দুর্ঘটনা দেখে তো চুপ করে থাকা যায় না। দাউ দাউ করে জ্বলছে যে কাঠের বাড়ি। নিজের কথা না ভেবেই, প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ করে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে গেলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ। সম্প্রতি এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল যুক্তরাষ্ট্রের ছোট্ট শহর সালেম।

বছর সত্তরের মার্শাল হেল্ম এদিন সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন নাতনির সঙ্গে। বেশ খানিকটা হাঁটাহাঁটির পর জিরিয়ে নিচ্ছিলেন বাসস্টপে। তখনও খেয়াল হয়নি, পিছনের কয়েকটা বাড়ি ছেড়েই একটি বাড়ির দেওয়াল বেয়ে উঠছে আগুনের লকলকে শিখা। কিছুক্ষণ পরে স্টপেজে এসে দাঁড়ানো একটি বাসের চালকই দৃষ্টি আকর্ষণ করান বিষয়টির। 

ততক্ষণে জ্বলছে গ্যারেজের দরজা। কোনো মতে জ্বলন্ত দরজাকে ভেঙেই বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লেন বৃদ্ধ। ভিয়েতনাম যুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকলেন দোতলায়। ধোঁয়ায় ধোঁয়াময় ঘর। শ্বাসকষ্টের মধ্যেও ঘুমন্ত দম্পতিকে ঘুম থেকে তুলে ফেললেন দ্রুত। মিনিট খানেকের জন্য পরিত্রাণ মৃত্যু থেকে। সামনের দরজা দিয়ে আগুন ঢুকে এসেছিল ভেতরেও। পিছনের দরজা দিয়ে যখন মার্শাল তাঁর দুই প্রতিবেশীকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন, তখনও আতঙ্ক কাটেনি তাঁদের।

স্বল্প আঘাত, শ্বাসকষ্ট ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে সেইভাবে আহত হননি গেলী ও ক্যাথি বেঞ্জামিন। তবে দমকল আসতে আসতেই পুরো ছাই হয়ে গেছে তাঁদের বাসস্থান। অথচ এই বিধ্বংসী আগুনের ব্যাপারে বিন্দুমাত্রও টের পাননি তাঁরা ঘুমের মধ্যে। মার্শাল নিজে না এগিয়ে এলে হয়তো শেষ হয়ে যেতে হত জ্বলন্ত বাড়ির মধ্যেই। বেঞ্জামিন দম্পতির কাছে মার্শাল এখন সাক্ষাৎ ‘দেবদূত’। যদিও এই কাজকে সামনে রেখে প্রশংসা কুড়তে নারাজ বৃদ্ধ সৈনিক। কেবলমাত্র নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন বলেই মনে করছেন তিনি... 

Powered by Froala Editor

More From Author See More