জলবায়ু পরিবর্তনে বিচলিত তরুণ প্রজন্ম, বাড়ছে উদ্বেগ, জানাল গবেষণা

জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) কারণে ক্রমশ বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। পৃথিবীর বুক থেকে মুছে যাচ্ছে একাধিক প্রজাতি। এর মধ্যে মানুষের অবস্থাও কিন্তু নিরাপদ নয়। ইতিমধ্যে পরিবেশ দূষণের কারণে বিপন্ন মানুষ। শারীরিকভাবে না হলেও মানসিকভাবে গুরুতর প্রভাব ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তন। ক্রমশ শিশুদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ (Eco-Anxiety)। এমনটাই  দাবি করছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষকরা। সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল পত্রিকায়।

এখনও পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনকে উদ্বেগের কারণ হিসাবে স্বীকৃতি দেননি চিকিৎসকরা। আনুষাঙ্গিক কারণ হিসাবে তার প্রভাব অবশ্য অনেক আগে থেকেই স্বীকৃত। কিন্তু ক্রমশ বিষয়টা মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই মত গবেষকদের। এই বিষয়ে বিস্তারিত পরিসংখ্যান হাজির করেছেন লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের দুই গবেষক মালা রাও এবং রিচার্ড পাওয়েল। তাঁদের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। এবং ব্যক্তিগত স্তরে কোনো উদ্যোগ নিতে না পারায় ক্রমশ তা মানসিক অসুস্থতায় পরিণত হচ্ছে। তাঁরা দেখিয়েছেন, ইংল্যান্ডের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশই ভয়াবহ উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

পরিবেশ সংক্রান্ত একের পর এক গবেষণা আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে, কত তাড়াতাড়ি পৃথিবীর পরিবেশ মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠতে চলেছে। আর এই কারণেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। কারণ সেই সময়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে এই প্রজন্মকেই। অতি সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে আরেকটি গবেষণাপত্র। তাতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ অন্তত ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে উষ্ণায়নকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।

রাও এবং পাওয়েলের গবেষণার শেষে তাঁরা জানিয়েছেন, পরিবেশ সমস্যার সমাধানে আশু ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সার্বিকভাবে মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হবে। আর এর জন্য রাষ্ট্রনায়কদেরই উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়াও তাঁরা কী কী উদ্যোগ নিচ্ছেন, এবং তার ফলে পরিবেশের কতটা উন্নতি হচ্ছে বা আদৌ হচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে সমস্ত তথ্য তরুণ প্রজন্মের জানা প্রয়োজন। তাদের এটাও জানা প্রয়োজন, ব্যক্তিগত স্তরে কী কী উদ্যোগ এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে। পৃথিবীর ভবিষ্যত যে পুরোপুরি অন্ধকার নয়, সেটা প্রমাণ করাই আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনের আভাস দিয়ে নোবেল 'ভবিষ্যৎদ্রষ্টা' বিজ্ঞানীদের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনে চেহারা পাল্টাচ্ছে পাখিদেরও!

More From Author See More