প্যারিস অলিম্পিক বয়কটের পথে ৪০টি দেশ

আর মাত্র একবছর। আগামী ২০২৪ সালেই প্যারিসে আয়োজিত হতে চলেছে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। মহামারীর প্রকোপ খানিকটা কমার পর থেকেই শুরু হয়েছিল তার প্রস্তুতি। নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে প্যারিস শহরকে। রং চড়ছে আইফেলের গায়ে। তৈরি হচ্ছে নতুন বাগান। কিন্তু এত আয়োজন শেষ অবধি বৃথা যাবে। সম্প্রতি এমনই ইঙ্গিত দিলেন পোল্যান্ডের ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রী কামিল বোর্টনিকজুক। 

পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া— আসন্ন প্যারিস অলিম্পিক (Olympics) থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানাল ইউরোপের এই চারটি দেশ। শুধু এই চারটি দেশই নয়, আগামীতে এই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা-সহ আরও ৪০টি রাষ্ট্র, সেই ইঙ্গিতও দিলেন কামিল বোর্টনিকজুক। বলাই বাহুল্য, এমনটা হলে নিঃসন্দেহে জৌলুশ হারাবে অলিম্পিক প্রতিযোগিতা। এমনকি অর্থহীন হয়ে উঠবে গোটা আয়োজন। কিন্তু হঠাৎ অলিম্পিক বর্জনের কারণ কী?

আসলে এই বিতর্কের শিকড় লুকিয়ে রয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই। এর আগে যুদ্ধের কারণেই ফিফা বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিল রাশিয়া (Russia)। এবার অলিম্পিক থেকেও রুশ ও বেলারুশিয়ান প্রতিযোগীদের নিষিদ্ধ করারই দাবি জানাচ্ছে, পাশ্চাত্যের দেশগুলি। সে-ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছে আবেদনও করেছিল পশ্চিম-দুনিয়া। তবে শেষ অবধি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। জানায়, কোনো ক্রীড়াবিদকে তাদের পাসপোর্ট এবং জাতীয়তার কারণে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়া নৈতিক নয়। একইভাবে অলিম্পিকের মঞ্চে কোনো দেশকে নিষিদ্ধ করার অর্থ, শুধুমাত্র সে-দেশের অ্যাথলিটদের ‘শাস্তি’ দেওয়া। এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বদলের কোনো সম্ভাবনা নেই। অবশ্য অলিম্পিক কমিটি এও জানিয়েছে, রুশ বা বেলারুশের পতাকা ব্যবহার করা চলবে না অলিম্পিকে, বরং কোনো নিরপেক্ষ পতাকা নিয়েই হাজির থাকতে হবে এই দুই দেশের ক্রীড়াবিদদের।

যদিও অলিম্পিক কমিটির এই সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি নয় অনেকেই। আর সেই কারণেই একজোটে অলিম্পিক থেকে নাম প্রত্যাহারের ডাক দিল ইউরোপীয় দেশগুলি। আপাতত ইউক্রেন ছাড়া ৪টি দেশ সামিল হয়েছে এই ‘বয়কট’ ক্যাম্পেইনে। পশ্চিমের অন্যান্য দেশও এই বয়কটে সামিল হবে, সেই সম্ভাবনাও প্রবল। চলতি মাসেই ফের বৈঠকে বসবে অলিম্পিক কমিটি। আর তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দুনিয়া। শেষ পর্যন্ত কি তবে পাশ্চাত্যের চাপেই সিদ্ধান্ত বদল করবে তারা? সেই উত্তর দেবে সময়ই…  

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More