সারা পৃথিবী ঘুরে, ৩ হাজার ক্যামেরা সংগ্রহ করেছিলেন স্কটল্যান্ডের এই ব্যক্তি

ছিল একটি ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা। কোনো মিউজিয়াম হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তার ভিতরের সংগ্রহের পরিমাণ দেখলে অবাক হয়ে যেতেই হয়। দেশবিদেশের কত ধরণের ক্যামেরায় ঠাসা সেই ঘর, তার সঠিক আন্দাজ পাওয়া মুশকিল। সেখানে যেমন আছে স্টিরিওস্কোপিক বা ৩-ডি ক্যামেরা, তেমনই আছে বহু প্রাচীন সমস্ত ক্যামেরার মডেল। আর এই সমস্ত মিলিয়ে সংখ্যাটা কোনোভাবেই ৩ হাজারের কম নয়। আর এই বিরাট সংগ্রহ জোগাড় করেছেন একজন ব্যক্তি। তাঁর নাম নেভিল জিম ম্যাথিউ। কর্মসূত্রে নানা দেশেই ঘুরতে হয়েছে তাঁকে। আর এর মধ্যেই একটু একটু করে এইসব ক্যামেরা সংগ্রহ করেছেন।

ম্যাথিউর এই নেশা কিন্তু খুব বেশি দিনের নয়। ২০১৭ সালে ৮১ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এর ঠিক ২৪ বছর আগে নিজের মেয়ের কাছে কানাডায় যাওয়ার সময় একটি অ্যান্টিক জিনিসের দোকানে ঘুরছিলেন ম্যাথিউ এবং তাঁর স্ত্রী ডরোথি। সেই দোকান থেকে একটি ক্যামেরা কিনে ম্যাথিউকে উপহার দিয়েছিলেন ডরোথি। আর সেই থেকেই শুরু। এরপর ২৪ বছরে যেখানেই গিয়েছেন সঙ্গে নিয়ে এসেছেন অন্তত একটি ক্যামেরা।

তবে ম্যাথিউ যে সমস্ত জায়গা থেকে বাছবিচার না করে ক্যামেরা সংগ্রহ করার মানুষ ছিলেন না, সেটা তাঁর মিউজিয়াম দেখলেই বোঝা যায়। খুব কম ক্যামেরাই ম্যাথিউর নজর কাড়ত, এমনটাই বলছেন ডরোথি। অথচ সেই অল্প অল্প দিয়েই একদিন সমস্ত ঘর ভর্তি করে ফেললেন তিনি। স্কটল্যাণ্ডের ইস্ট নিউক গ্রামের ছোট্ট বাড়িটায় আর জায়গা হল না। অবশেষে একটি পরিত্যক্ত স্যালভেশন আর্মি হল ভাড়া করলেন তিনি।

আজ ম্যাথিউর মৃত্যুর ৩ বছর পরেও সেই সংগ্রহ যত্নে পরিচর্যা করছেন ডরোথি। অসংখ্য ক্যামেরা আর তার ফিল্মের নমুনার মাঝে একসঙ্গে রাখা আছে কোডাক ব্রাউনির প্রায় সমস্ত মডেল। যে মডেলের সাহায্যে ফটোগ্রাফি সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় এসেছিল। এছাড়াও সেই অতি প্রাচীন কালের কালো চাদর ঢাকা ক্যামেরা থেকে বিরাট আকৃতির কিন্তু ফোল্ডিং ক্যামেরা – সবই আছে। আছে অতি সাম্প্রতিক কালে হারিয়ে যাওয়া বেশ কিছু মডেলও। ডরোথির কথায়, সময়টাও ছিল ক্যামেরা সংগ্রহ করার মতোই। ডিজিটাল ক্যামেরার রমরমা বাজারে তখন সবাই পুরনো ক্যামেরা ফেলে দিতে চাইছেন। ম্যাথিউর মতো মানুষরা সেগুলো যত্নে তুলে নিয়েছিলেন।

আজ ম্যাথিউ আর নতুন কোনো ক্যামেরা সংগ্রহ করে আনেন না। তাঁর কাছে আসা মানুষদের ক্যামেরার গল্প শুনিয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা নষ্ট করেন না। ডরোথি তখন বিরক্ত হতেন ঠিকই। কিন্তু এখন সেই দায়িত্বটা নিজেই কাঁধে তুলে নিয়েছেন। যদিও তাঁর মৃত্যুর পর এই সংগ্রহশালার কী হবে, সেকথা জানা নেই। এর উপযুক্ত মূল্যায়ন কি হবে সেদিন?

তথ্যসূত্র - বিবিসি

Powered by Froala Editor