গৌরী লঙ্কেশ-হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত 'বেকসুর', মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্টে

দিনটা ছিল ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭। বেঙ্গালুরুতে নিজের বাসভবনের সামনেই খুন হন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ (Gauri Lankesh)। প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চমকে উঠেছিল সারা দেশ। পৃথিবীজুড়ে সাংবাদিকরা ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তারপর ৪ বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। অথচ এখনও শাস্তি পাননি গৌরীর খুনিরা। শুধু তাই নয়, গতকাল নতুন করে গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলা উঠল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। গৌরী লঙ্কেশের হত্যার সঙ্গে জড়িত দলটিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত মোহন নায়েককে নিয়েই মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্ট অবধি।

বেঙ্গালুরু শহরের একজন জনপ্রিয় ভেষজ চিকিৎসক মোহন নায়েক। ইতিপূর্বে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা আদালতে যায়নি। ঠিক এই যুক্তিকে সামনে রেখেই গতমাসে তাঁকে সংগঠিত হত্যামামলা থেকে নিষ্কৃতি দেয় কর্ণাটক হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই যুক্তির বিরুদ্ধেই এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন গৌরীর বোন কবিতা লঙ্কেশ। ইতিমধ্যে কর্ণাটক হাইকোর্টের কাছে বিশদ চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। দেরিতে হলেও সেই চার্জশিটে অপরাধীদের কার্যকলাপের বিশদ বিবরণ নথিভুক্ত রয়েছে। গৌরী লঙ্কেশের হত্যার সঙ্গে যে অভিযুক্ত দলটি জড়িত ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে মনে করছে আদালত। পাশাপাশি এই একই দল নরেন্দ্র দাভোলকার এবং গোবিন্দ পানসারের হত্যার সঙ্গে জড়িত। আর এই তিনটি ঘটনাতেই অপরাধীদের আশ্রয় দিয়েছেন মোহন নায়েক। কিন্তু নায়েকের আইনজীবী অন্য যুক্তি হাজির করেছেন।

আইনজীবীর যুক্তি অনুযায়ী কোনো অপরাধী দলকে আশ্রয় দিলেই তাকে অপরাধী দলের সঙ্গে যুক্ত বলা চলে না। বিশেষ করে তাঁর বিরুদ্ধে যখন পূর্বের কোনো মামলা নেই। অপরপক্ষে কবিতা লঙ্কেশের আইনজীবী এই যুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নায়েকের আইনজীবীর যুক্তিতেই সমর্থন জানিয়েছে আদালত। এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কর্ণাটকের রাজনৈতিক পরিবেশও। অনেকেই দাবি করছেন রাজনৈতিক ক্ষমতাবিস্তার করেই আদালতকে প্রভাবিত করেছেন মোহন নায়েক। আপাতত মঙ্গলবারের শুনানিতে মোহন নায়েকের জামিনের বিষয়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শেষ পর্যন্ত মামলার রায় কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সবাই। গৌরী লঙ্কেশের পাশাপাশি এটা দাভোলকার এবং পানসারেরও সুবিচারের প্রশ্ন।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
তালিবানি আগ্রাসনের মধ্যেই শান্তির স্বপ্নে বুঁদ আফগানিস্তানের মহিলা সাংবাদিক

More From Author See More