আরাবল্লীর অরণ্যে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

জঙ্গল কেটে যাঁরা নিজেদের বাড়ি তৈরি করেছেন, তাঁদের সেই সমস্ত অট্টালিকা ভেঙে ফেলা হবে। সম্প্রতি এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যে আদালতের এই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে হরিয়ানা রাজ্য সরকার এবং ফরিদাবাদ পৌরসভার কাছে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। এর ফলে ভাঙা পড়তে চলেছে অন্তত ১০ হাজার অট্টালিকা।

দিন দুয়েক আগেই অ্যারে ফরেস্ট অঞ্চলের বে-আইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল মহারাষ্ট্র হাইকোর্ট। আর এবার আদালতের নিশানায় আরাবল্লী অরণ্যের বে-আইনি নির্মাণ। গতবছরই এইসমস্ত বে-আইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হরিয়ানা সরকার। ফরিদাবাদ পৌরসভা থেকে সংশ্লিষ্ট নির্দেশ পৌঁছে যায় প্রত্যেক বাসিন্দার কাছে। তবে রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত আদালত চূড়ান্ত রায়ে জানিয়ে দিল, যে কোনো মূল্যেই অরণ্য অঞ্চলের বে-আইনি নির্মাণ সরিয়ে ফেলতেই হবে। এই বিষয়ে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও অন্যান্য বিষয়ে রাজ্য সরকারকেই নিষ্পত্তি করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। 

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে, অনুরূপ বিষয় নিয়ে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। এই প্রসঙ্গে আদালতের ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের রায়কেই স্থায়ী বলে ধরে নিতে হবে। তবে বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথাও জানিয়েছেন বিচারপতি এএম খানওয়ালিকর এবং দীনেশ মহেশ্বরীর বেঞ্চ। তাঁদের মতে, ভারতীয় আইন অনুযায়ী জমি দখলকারীদের কখনও উদ্বাস্তু হিসাবে গণ্য করা চলে না। এবং এক্ষেত্রে তাঁদের অন্যত্র যাওয়ার জায়গাও নেই। ফলে সেই ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে।

৬ সপ্তাহের মধ্যে এই জটিলতার বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সম্পূর্ণ তথ্য দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে বনবিভাগকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারাও যেন একটি পৃথক রিপোর্ট তৈরি করে। এই সমস্ত রিপোর্ট হাতে পেলে আবারও পুনর্বাসন ও অন্যান্য বিষয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত। সমস্যার জট পুরোপুরি না মিটলেও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একটা সমঝোতার রাস্তা তৈরি হল বলেই মনে করছেন দুই পক্ষের আইনজীবীরাই। সেইসঙ্গে ভারতের অন্য যে সমস্ত অরণ্য অঞ্চলে বে-আইনি নির্মাণ মাথাচারা দিয়ে উঠেছে, সেখানেও যাতে দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর হয়, সেই দাবিই জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা।

আরও পড়ুন
স্কুল-কলেজে এবার এলজিবিটি সংক্রান্ত পাঠ্যও, ঐতিহাসিক রায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ট্রাম্প-জমানায় ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব চরমে, কাঠগড়ায় মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট

More From Author See More