সচিনকে একাধিকবার ভুল আউট দিয়েছেন, স্বীকারোক্তি স্টিভ বাকনারের

ভারতীয়দের কাছে ক্রিকেটের ভগবান মানেই তো সচিন তেন্ডুলকর। কিন্তু খেলার মাঠে সেই ভগবানের ওপরেও যিনি কথা বলতে পারেন তিনি আম্পায়ার। ব্যাটে বা বলে হাত না চুঁইয়েও তিনিই মাঠের একমাত্র শাসক, বা অন্ধ বিচারক। তবে মানুষের বিচারেও তো কিছু ভ্রান্তি থেকে যায়। আর তার ফল যদি ভুগতে হয় স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকরকে! সম্প্রতি এমনই ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন আম্পেয়ার স্টিভ বাকনার। একটি রেডিও প্রোগ্রামে তিনি তাঁর জীবনের দুটি ভুল সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন, আর এই দুই ভুলেরই মাশুল গুনতে হয়েছে ক্রিকেটের মহারাজকে।

সারা জীবনে ১২৮টি টেস্ট ম্যাচ, ১৮১টি ওডিআই এবং পরপর পাঁচটি বিশ্বকাপ ফাইনালে আম্পেয়ারিং করার বিরল রেকর্ড যে বাকনারের, তাঁর একটি কথাই যে খেলার মাঠের শেষ কথা, এতে আর আশ্চর্যের কী! কিন্তু মানুষ মাত্রেই তো ভুল হয়। এই নিয়েই চলছিল রেডিও প্রোগ্রাম। আজকাল ক্রিকেটের আম্পেয়ারিং করার কাজে প্রযুক্তির ব্যবহারের পক্ষে এবং বিপক্ষে উঠে আসছে দুধরনের মতামত। বকনার নিজে কিন্তু যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল না হওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পান না। তিনি মনে করেন, খেলার বিচারকের কাজটা একজন নিষ্ঠাবান পদার্থবিদের। আর সেক্ষেত্রে মাঠে একজন মানুষের হিসাবে ভুল থাকা খুব স্বাভাবিক। সেই প্রসঙ্গেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন বাকনার।

প্রথমটি ঘটে ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার গাব্বা টেস্ট সিরিজে। সেবার সচিনকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন বাকনার। গ্যালারি থেকে প্রতিবাদ উঠলেও বাকনার নিজের সিদ্ধান্তে অটল। কিন্তু বাড়ি ফিরে খেলার পুনঃপ্রচার দেখতে গিয়েই হোঁচট খেলেন তিনি। সত্যিই বলটা যাচ্ছিল উইকেটের উপর দিয়ে। বাকনারের কথায়, সেদিন সারারাত ঘুম হয়নি তাঁর। পরের ঘটনাটি ঘটে খোদ কলকাতার বুকে। ২০০৫ সালের ওডিআই ম্যাচ, আব্দুল রাজ্জাকের বলে সোজা চলে গেল উইকেট কিপারের হাতে। সচিনের ব্যাটে একবার স্পর্শও করেনি। কিন্তু বাকনার সেবারেও আউট করেছিলেন সচিনকে।

এছাড়াও অনেকবার ভুল সিদ্ধান্তের জন্য বিতর্ক জড়িয়েছেন বাকনার। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব বিচারের মাশুল গুনতে হয়েছে ভারতকে। কিন্তু কোনো আম্পায়ার জেনেবুঝে ভুল করেন না বলেই এদিন মন্তব্য করেছেন তিনি। আসলে পুরোটাই মানুষের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভুল। পরে ঘটনাটা আবার দেখলে ভুল বুঝতে পারা যায়। কিন্তু মাঠের সিদ্ধান্ত তো মাঠেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এখানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করলে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল এড়ানোর সম্ভবনা বেড়ে যায় বলে মনে করছেন বাকনার। কিন্তু এভাবে যন্ত্রের উপর নির্ভরশীলতা মানুষের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয় কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন তিনি।

Powered by Froala Editor

More From Author See More