একদিনে কলকাতায় আত্মঘাতী ৭, মানসিক অবসাদ না অন্য কিছু?

ক্যালেন্ডারে একটি তারিখ, ১৭ জুন ২০২০। শহর কলকাতার বুকে এই দিনটা এসেছিল অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু শেষে আর কিছুই স্বাভাবিক থাকল না। শহরের বুক থেকে মুছে গেল সাতটি জলজ্যান্ত প্রাণ। আর আশ্চর্যের বিষয়, এঁরা প্রত্যেকেই আত্মঘাতী। এবং প্রত্যেকেই মারা গিয়েছেন গলায় দড়ি দিয়ে।

গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে সাতটি আত্মহত্যার ঘটনায় মারা গিয়েছেন ১০ বছরের বালক থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ, নানা বয়সের মানুষ। তবে প্রত্যেকেই পুরুষ। ঢাকুরিয়া স্টেশন রোডের ১০ বছরের এক বালক ছাদে উঠেছিল কাপড় শুকাতে। তারপর সেখানেই একটি রাবারের পাইপ থেকে তার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ছেলেটির মা নানা বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করায় একাকিত্ব ও অবসাদ গ্রাস করেছিল তাকে।

আবার সিলিং ফ্যান থেকে গামছার ফাঁস ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে রিজেন্ট পার্কের রোহিত গুপ্তা (১৯)। কলেজছাত্র রোহিত পড়াশুনোর জন্য প্রায়ই বকুনি খেত বাবা-মায়ের কাছে। বেহালার বাসিন্দা ৭০ বছরের নতুল মন্ডল একইভাবে গামছায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়াও শহরে আরও চারজনের মৃত্যু ঘটেছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাঁদের কারোর বয়স ৩০, কারোর ৪০ আবার কারোর ৫৫। কিন্তু মৃত্যুর পদ্ধতি এক।

একইদিনে এতগুলি আত্মহত্যার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত প্রশাসন। সাম্প্রতিক লকডাউনের ফলে মানুষের মধ্যে হতাশা এবং একাকিত্ব বাড়ছে, একথা মনস্তাত্ত্বিকরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন। এই একাকিত্ব থেকেই জন্ম নিতে পারে অবসাদ। তবে এক্ষেত্রে আত্মহত্যার জন্য সেই অবসাদ দায়ী, নাকি আছে অন্য কোনো কারণ? 

আরও পড়ুন
মেলেনি করোনার চিকিৎসা, মেঝেতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা কলকাতার একই পরিবারের তিনজনের

এখনও নিশ্চিত কোনো উত্তর নেই। আগামী দিনে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আবার না ঘটে, সেবিষয়ে চিন্তিত প্রশাসনিক কর্তারা।

আরও পড়ুন
‘করোনা’ ও ‘আইসোলেশন’ : মানুষ কতটা ‘একলা’?

Powered by Froala Editor