ইতিহাস বা রূপকথায় নয়, এবার বাস্তবেই দেখা মিলবে ডোডো পাখির

মায়ায় ঘেরা, রহস্যে ঘেরা ডোডো পাখি। না, গত কয়েক শতক ধরে কেউই সেই পাখিকে দেখেনি। এমনকি সত্যিই যে কোনোকালে ডোডো পাখির অস্তিত্ব ছিল, সেই প্রমাণও খুব বেশি পাওয়া যায় না। তবু ডোডো পাখি ছিল, এই বিশ্বাসটুকু রয়েছে। তাকে ঘিরে নানা রূপকথা, নানা কবিতারও জন্ম হয়েছে। আর অ্যালিসের রূপকথা তো ডোডো পাখিকে (Dodo Bird) কিংবদন্তি করে দিয়েছে। তবে শুধুই কল্প-কাহিনিতে নয়, এবার বাস্তবেই ফিরতে চলেছে ডোডো পাখি। এমনই সম্ভাবনার কথা শোনালেন মার্কিন গবেষকদের একটি দল।

আসন্ন বিলুপ্তির মুখ থেকে প্রাণীদের ফিরিয়ে আনার কাজটাও সহজ নয়। আর যে প্রাণী ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তাকেও কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব? এই নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানা জল্পনা চলছে বিগত বেশ কয়েক দশক ধরেই। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ‘হাউ টু ক্লোন আ ম্যামথ’ নামে একটি বই লিখে ফেলেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাণী বিশেষজ্ঞ ব্রেথ স্যাপাইরো। শুধু ম্যামথ নয়, আরও বেশ কিছু প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর সঙ্গে সেখানে ডোডো পাখির উল্লেখও করেছিলেন তিনি। আর সম্প্রতি রয়্যাল সোসাইটি অফ মেডিসিনের একটি সভায় তিনি জানিয়েছেন, এই কাজে ইতিমধ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি ও তাঁর নেতৃত্বাধীন গবেষকদের দলটি। ডোডো পাখির ডিএনএ গঠন পর্যন্ত জানতে পেরেছেন তাঁরা। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হবে।

শ্রীলঙ্কার কাছে মরিশাস দ্বীপেই সম্ভবত ডোডো পাখির বাস ছিল। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকের বেশ কিছু ডাচ ঔপনিবেশিকের বর্ণনায় ডোডো পাখির কথা জানা যায়। এই তথ্যগুলিকে এখনও মোটামুটি প্রামাণ্য বলেই ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া ইউরোপের বেশ কিছু রূপকথায় ডোডো পাখির উল্লেখ থাকলেও তার পিছনে প্রমাণের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এমনকি মরিশাস দ্বীপেও সপ্তদশ শতকের পর আর ডোডো পাখির সন্ধান পাওয়া যায়নি। অনুমান করা যায় এই সময়েই ডোডো পাখি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তবে ঠিক কবে এবং কীভাবে এই পাখি বিলুপ্ত হল, তারও কোনো নথি নেই।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক স্যাপাইরো কীভাবে এই হারিয়ে যাওয়া ডোডো পাখির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করলেন, তাও এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেলেই সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। তবে এই ডিএনএ নমুনা থেকেও কি আস্ত একটি পাখিকে প্রাণ দেওয়া সম্ভব? অধ্যাপক স্যাপাইরোর মতেও বিষয়টা বেশ কঠিন। স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্লোন বিজ্ঞানীরা আগেও তৈরি করেছেন। ডলি নামের ভেড়াটির কথা তো সকলেরই জানা। কিন্তু পাখির প্রজনন প্রক্রিয়া অনেক বেশি জটিল। তাই তার ক্লোন তৈরিও বেশ কঠিন। এবং এখনও এই বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। শেষ পর্যন্ত এই পরীক্ষা কতদূর সফল হয়, আপাতত সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন
পাখির বাসায় ঘেরা নতুন ঘর সুইডেনের ট্রি-হোটেলে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পাখি বাঁচানোর তথ্যচিত্র বানিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বঙ্গসন্তানের