সারাবছরই সেখানে তাপমাত্রা থেকে হিমাঙ্কের নিচে। তাই চিরতুষারের দেশ হিসাবেই পরিচিত বিশ্বের এই অঞ্চল। কথা হচ্ছে আন্টার্কটিকা এবং আর্কটিক অঞ্চল নিয়ে। পৃথিবীর এই দুই মেরুপ্রদেশই ভয়াবহ তাপপ্রবাহের শিকার। হ্যাঁ, মেরুপ্রদেশে তাপপ্রবাহ (Heat Wave)! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এমনটাই সত্যি। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে আসছে এমনই তথ্য। স্বাভাবিকভাবেই যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে গবেষকদের কপালে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিগত এক বছরে আন্টার্কটিকার বহু অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাপিয়ে গিয়েছিল। উত্তরমেরুতেও তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বিশেষ করে গত বছরের শেষের দিকে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাপমাত্রা। এই ঘটনা আর কিছুই না, বৈশ্বিক জলবায়ুর চিরাচরিত পরিকাঠামোয় চিরস্থায়ী ভাঙন। এমনটাই ইঙ্গিত করছেন গবেষকরা। আশঙ্কার বিষয়, এই ঘটনা আরও দ্রুত ত্বরান্বিত হতে পারে আগামী দিনে।
দুই মেরুতে তাপমাত্রার এই দ্রুত বৃদ্ধির পিছনে মানুষের কার্যকলাপই দায়ী। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে ওজোনস্তরে বড়ো কোনো পরিবর্তন সেইভাবে লক্ষ করেননি গবেষকরা। ফলে, অনিয়ন্ত্রিত কার্বন নির্গমনকেই তাঁরা দায়ী করছেন এই নাটকীয় জলবায়ু বদলের জন্য।
সাম্প্রতিক সময়ে উষ্ণায়ন প্রতিরোধ এবং কার্বন নির্গমনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বিশ্বজুড়ে। কিছুদিন আগেই কপ-২৬ সম্মেলনেও নেওয়া হয়েছিল একাধিক পদক্ষেপ। তবে সেই সমস্ত মডেলের সঠিক ব্যবহার বা প্রয়োগ হচ্ছে না বলেই আশঙ্কা গবেষকদের। পাশাপাশি প্রকৃতির স্বাস্থ্য অবনতির হার ক্রমশ ছাপিয়ে যাচ্ছে গবেষকদের অনুমানকে।
পরিসংখ্যানগত দিক থেকে প্রশান্তমহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম অংশ সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে তাপপ্রবাহের। আর্কটিক অঞ্চলের এই অংশেই সবচেয়ে বেশি বরফের গলন লক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এভাবেই পরিস্থিতি এগোতে থাকলে, কয়েক দশকের মধ্যেই দুই মেরুর সমস্ত বরফ গলে যেতে পারে বলেই সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা। তাতে শুধু মানুষই নয়, বিপর্যস্ত হবে গোটা জীবজগৎ…
Powered by Froala Editor