যেচে ডেকে আনা হবে বন্যা! পরিকল্পনা পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের

নদীমাত্রিক দেশ আমাদের ভারত। নদী যেমন অনেককিছু দিয়েছে, তেমনই মাঝে মাঝে বন্যা এসে কেড়েও নিয়ে যায়। হঠাৎ বন্যায় কৃষিজমি ভেসে গেলে মাথায় হাত দিয়ে বসেন কৃষকরা। কখনও আবার হাজারে হাজারে মানুষ ভিটেমাটি হারান। কিন্তু যদি বলে হয় এমন এক দেশের কথা, যেখানে বহু অর্থ ব্যয় করে কৃত্রিম বন্যা (Artificial Flood) সৃষ্টি করা হচ্ছে। অবাক হচ্ছেন? সেই দেশের সঙ্গে অনেকটাই পরিচিত আমরা। ইংল্যান্ড। হ্যাঁ, প্রায় আড়াই লক্ষ ইউরো খরচ করে ইংল্যান্ডের ট্যামার নদীতে বন্যা সৃষ্টির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

ড্যাভনশায়ার আর কর্নওয়াল অঞ্চলের মাঝে সীমানার মতো বয়ে গিয়েছে ট্যামার নদী। তবে আজকে তার অবস্থা মৃতপ্রায় হলেও একসময় রীতিমতো চওড়া নদী ছিল ট্যামার। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ভিক্টোরিয়ান যুগে, অর্থাৎ উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কৃত্রিমভাবে নদীর বুক থেকে জমি উদ্ধার করা হয়েছিল। তারপর সেই জমি কৃষিকাজে লাগানো হয়েছিল। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই উদ্যোগ বৈপ্লবিক মনে হলেও আজ তার ফল হাতেনাতে পাচ্ছে মানুষ। নদী ক্রমশ শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষিকাজও এখন আর সেভাবে হয় না। পাশাপাশি একের পর এক পাখি ও মাছ হারিয়ে যেতে বসেছে ইংল্যান্ড থেকে। তাই বাস্ততন্ত্র রক্ষার জন্য এবার নদীর এলাকা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

গতবছরই ১৬টি খাল খোঁড়া হয়েছিল ট্যামার নদীর পার বরাবর। সেই খাল দিয়ে একটু একটু করে জল ঢুকেছে। একেবারে জল না ঢুকে যাতে জোয়ারের সময় অল্প অল্প জল ঢোকে, সেই বিষয়ে নজর রেখেছেন প্রকল্পের কর্তারা। তবে এবার আরও ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। আর এর জন্য অন্তত ২৫টি বিকল্প পথ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বছরখানেকের মধ্যেই নদীর চর সম্পূর্ণ জলে ঢেকে যাবে বলেই বিশ্বাস তাঁদের।

ইতিমধ্যে গত এক বছরে ড্যাভনশায়ার অঞ্চলে ফিরে এসেছে হেরন এবং লিটল এরগেটের মতো পাখি। এই ঘটনাকে যথেষ্ট ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসাবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এই প্রকল্প সফল হলে ম্যালার্ড ডাক, শেলডাক, রেডস্যাঙ্ক এবং টিলের মতো পাখিও ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস তাঁদের। হয়তো নদীর জলে আবারও ফিরে আসবে স্যালমন বা এলভার মাছ। কৃত্রিম সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার বদলে যদি প্রকৃতিকেই কাজে লাগানো হয়, তাহলে খরচও যেমন কম হবে তেমনই এক দীর্গস্থায়ী বাস্তুতন্ত্রও গড়ে উঠবে।

আরও পড়ুন
বিলুপ্তপ্রায় শকুন সংরক্ষণে নয়া সাফল্য ভারতের পরিবেশবিদদের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে নিহত ২২৭ পরিবেশকর্মী, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

More From Author See More