জেলখানা, কোর্ট লকআপ, ছাগল

হাওড়া জেল— হাওড়া মল্লিক ফটক জেলে যাঁরা আটক থাকতেন, তাঁদের মামলা মূলত হাওড়া কোর্টেই উঠত। এস ডি জে এম, জজসাহেব— সেশন কোর্ট, পুলিশ কোর্ট, জাজেস কোর্ট। জাজেস কোর্টেই সেশনস। দায়রায় সোপর্দ যাকে বলে। মুহুরিদের ভাষায় কেস পুট আপ করা। হাওড়া কোর্ট ষাটের দশকে বেশ টিমটিমে আলো সমন্বিত বিচারস্থান বা বিচারালয়। সেখানে জজ সাহেবরা। হাওড়া জেলে যাঁরা থাকেন, তাঁরা মানে আসামী, কয়েদি— আনডারট্রায়াল— বিচারাধীন বন্দি, সাজাওয়ালা— সাজাপ্রাপ্ত— কনভিক্ট— সব মিলিয়েই তো পুলিশ কোর্ট, জাজেস কোর্টের সওয়াল-জবাব। ক্রস এগজামিনেশন। সাক্ষীকে জেরা প্রথম পি পি— পাবলিক প্রসিকিউটার, তার আগে কোর্ট ইনসপেক্টার, মামলার আই ও— ইনভেস্টিগেটিং অফিসার— সকলে জড়িয়ে থাকেন এই মামলার সঙ্গে। আইন— ভারতীয় আইন ব্যবস্থা— পিনাল কোড বা পেনাল কোড, আই পি সি— এসবও মিশে থাকে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে, অবধারিতভাবে। কোর্টে— আদালতে কোর্ট বসে সাধারণত বেলা দশটায়। জজসাহেব যখন ঢোকেন, তখন সমস্ত কোর্ট ঘর দাঁড়িয়ে ওঠে। জজ সাহেব চেয়ার গ্রহণ করলে তখন সবাই বসে পড়েন। কোর্টে পা কাঁচি করে— এক পায়ের ওপর অন্য পা তুলে ক্রসড লেগ হয়ে বসা যাবে না। হাইকোর্টে এক সময় হাফহাতা শার্ট ‌পরা নিষেধ ছিল আদালত চলার সময়। সেই নিয়ম এখনও চালু আছে কী না জানি না। কিন্তু সত্তর দশকেও এই তরিকা চালু ছিল। হাইকোর্টে তো টুপি, হ্যাট, ছাতা— সবই আইনের নিষেধাজ্ঞা জড়ানো। বড়ো ছাতা হলে তো কথাই নেই। সব গেটে আটকাবে। এই অভিজ্ঞতা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে ধূপগুড়ির অনুকূল বর্মণ কন্যার ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হাইকোর্টে আইনি বিষয়ে নানা জিজ্ঞাসা মেটানোর জন্য। আইন, আইনজীবী, ভারতীয় আইন ব্যবস্থা বিষয়ে আমার জিজ্ঞাসা বরাবরই। যত বয়স বেড়েছে, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা প্রবলতর হয়েছে, ক্রমশ ক্রমশ। ধূপগুড়ির সেই অসহায় কন্যা— অনুকূল বর্মণের মেয়ে শিপ্রা বর্মণ পড়েছিলেন লাইনের ওপর। তাঁর অন্তর্বাসটি— নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস ছিল রেল লাইনের ওপর। ভয়ানক হায়নারা— দু পেয়ে হায়না সব, রাজনৈতিক নামাবলি গায়ে দিয়ে, নামাবলি জড়িয়ে হত্যা করেছে এই কন্যাকে। তার আগে ধর্ষণ। আমরা অনুকূল বর্মণের উঠোনে বসেছিলাম। অনুকূল বর্মণের মাথা ন্যাড়া, মুণ্ডিতমস্তক অনুকূলবাবু, একটু দূর থেকে যখন এলেন, তখন তাঁর দু চোখে স্থায়ী বিষণ্ণতা থানা গেড়ে আছে। অনুকূলবাবু বসেছিলেন কন্যাদাহের শ্মশানে। ধর্ষিত, খুন হয়ে যাওয়া মেয়েকে— মেয়ের লাশকে যেখানে দাহ করা হয়েছে, সেইখানে তিনি গিয়ে বসেছিলেন অনেকক্ষণ। তখন বেলা দশটা-এগারোটা। জলপাইগুড়ির নাম করা সব কবিরা এসেছেন। তাঁরা শুধু জলপাইগুড়ির বিখ্যাত কবি নন, মানে শুধুমাত্র জলপাইগুড়ির কবি বললে, তাঁদের ছোটো করা হবে, তো সে যাই হোক, কবি, সাংস্কৃতিক কর্মীরা ছিলেন। সারাদিনের কাজ আমাদের। অনুকূল বর্মণের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এস পির কাছে সাদা কাগজে লেখা ডেপুটেশান জমা দেওয়া। বিচার চেয়ে, এই হত্যার। এস পি ছিলেন না। ছিলেন তাঁর বদলে মিস্টার কুজুর, হয়তো বা অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার। তিনি নিলেন ডেপুটেশান, রিসিভও করলেন আধিকারিকের স্ট্যাম্প-সহ। আমরা ফিরে এলাম তারপর। সেইদিনই ট্রেন ধরে ফেরা, ফিরে আসা। ফিরে আসা কলকাতায়। শেয়ালদা স্টেশনে। এইসব কথা বলা এই জন্য হাইকোর্টে অনুকূল বর্মণ কন্যা শিপ্রা বর্মণের ধর্ষণ ও হত্যা মামলার ডিফেন্স কাউন্সিল ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। আমরা এজলাসে ঢুকছি, হাইকোর্টের। সেখানে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য অ্যাপিয়ার হবেন। আমাদের সব কিছু বাইরে রেখে আসতে হল, ছাতা, ব্যাগ, মাথার হ্যাট। এসব কথা বলা এই জন্য, সত্তর দশকে, সত্তর দশকের একেবারে গোড়ায় এই সব যাওয়া-আসা ইত্যাদি ব্যাপার ছিল না। না হলে কাশীপুর-বরানগর গণহত্যা, বারাসাত গণহত্যা, কোন্নগর— নবগ্রামের হত্যা, বালি মেকলে স্কুলের কাছে হত্যা, যে মৃতদেহগুলি ফেলে দেওয়া হয়, মেকলে স্কুলের স্যানিটারি পায়খানার চেম্বার খুলে। পরে উদ্ধার হয় সেই সব শরীর, বিকৃত, পচা-গলা। সে যাই হোক, আবার ফিরছি হাওড়া কোর্ট লকআপ প্রসঙ্গে। পণ্ডিত বনাম হাওড়া জেল— মল্লিক ফটকের পুরানা খাট্টু— ‘জেল বার্ডদের’ আন্ধাধুন্ধ লড়াই। এই সব ঝাড়পিট, কাওতালির বিবরণ আছে আমার ‘কাছেই নরক’ নামের আখ্যানে, অন্যভাবে। তো সে যাই হোক, পণ্ডিত নামের এই লোকটি অসম্ভব দমদার, লড়ুয়ে, জঙ্গবাজ। মারকুটেও যথেষ্ট। তার দলবল— গ্যাং খুবই খুংখার— যাকে সাদা বাংলায় বলা হয় বিপজ্জনক শুধু নয়, অতি বিপজ্জনক। ‘পণ্ডিত’ দমদম জেলে— দমদমাইয়া— ‘খাট্টু’। হাওড়া জেল, হাওড়া মল্লিক ফটক জেল নামে যা বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত, সেই জেল-খাট্টুদের সঙ্গে পণ্ডিত-গ্যাংয়ের নিয়মিত ঝামেলা। হাওড়া জেলের খাট্টু নেপালিয়া, ললিত, পাহেলওয়ান— এদের সঙ্গে পণ্ডিতের গ্যাংয়ের। প্রতিবার— প্রায় প্রত্যেক কোর্ট দিনে এই ঝাড়পিট, আন্ধাধুন্ধ মারামারি, বিলাবাট্টা। ঝাড়পিট বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেলে লকআপবাবু তার কোমরের পেটি— অশোকস্তম্ভ লাগানো বেল্ট নিয়ে— কোমর থেকে খুলে নিয়ে দু দলকেই দে ধনাদ্দন, দে ধনাদ্দন, দে দনাদ্দন। এসব কথা আগেই লিখেছি। পুরানা জেলখাট্টুরা বেশিরভাগই লুঙ্গির নিচে কয়েকটি চোরাই বা চোরা পকেট সমেত শর্ট প্যান্ট, শর্ট প্যান্টের নিচে জাঙিয়া পরে থাকে। আমি সত্তর দশকের গোড়ার কথা বলছি। তখন একটা ভালো শর্ট প্যান্ট করাতে হয়তো দশ টাকা খরচ হয় বড়োজোর। সেও মাখন জিন বা গ্যাবাডিনের কাপড়ের। শর্ট প্যান্টে সাধারণত অনেকগুলো পকেট আর চোরাই পকেট, তার ভেতর নানা কাজের দ্রব্য। বিড়ি, খৈনিক ডিবে আর চুনৌটি— চুন রাখার ছোটো জায়গা, খুব ছোট্ট। টিনের। তার ভেতর ঠাসা চুন। অনেক অনেক নয়, কমই, কিন্তু উপুর-চাপুর। ভর্তি যাকে বলে, একেবারে। তামাক পাতার কুচো-কুচি বাঁ হাতের পাতায় রেখে খানিকটা চুন দিয়ে, তারপর ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে রগড়ানি। রগড়ানি— রগড়ানো। তারপর চুন আর তামাক পাতায় বেশ খানিকটা মাখো মাখো মেরাম্মত হতে গেলে, তখন তা থেকে ধুলো ঝাড়া, বাঁ হাতের এক্সট্রা ধুলো বার করা। যদিও সত্তর দশকের গোড়ায় গোড়ায় খৈনিক নেশা সেভাবে এপিডেমিক মহামারীর প্রক্রিয়ায় বাড়েনি। বরং সিগারেট বিড়ি তখন অনেক অনেক বেশি নাশা ছায়াচ্ছন্ন। সিগারেট, বিড়ির চলন খুব বেশি ধূমপায়ীদের মধ্যে। সেই সঙ্গে বর্মার বার্মা চুরুট— বার্মিজ চুরুট নয়তো ক্যুবান— হাভানা চুরুটের কদর খুব বেশি। এছাড়াও ছিল টোব্যাকো পাইপ, সেখানে ‘ভ্যান গঘ’, ‘ফ্লাইং ডাচ ম্যান’, ‘ক্যাপসটেন’। আর পাশাপাশি পাকিয়ে খাওয়া হত সিগারেট— আঠা সহ সাদা কাগজ। তার ভেতর টোব্যাকো ঠুসে ঠুসে থুতু দিয়ে দিয়ে সিগারেট নির্মাণ। সরু— বেশ সরু, কাঠি কাঠি চেহারার সেই পাকানো সিগারেট। পাকিয়ে— নিজে বানিয়ে টানা আর সেই সঙ্গে পছন্দের কাউকে লালায় ভিজিয়ে সিগারেট তৈরি করে খাওয়ানোর মধ্যে এক ধরনের ‘ম্যাচো’, ‘শিভালরি’ ইত্যাদি ছিল। অনেকেরই পাকিয়ে খেতে গিয়ে লালা জুবড়ে একেবারে যাচ্ছেতাই দশা। ভিজে যায় পাকানো সিগারেট। ‘ক্যাপসটেন’, ‘উইলস’— এইসব পাকিয়ে তোলা তাম্রকূটের মূল উৎস। আমি আশির দশকে দেখেছি হু কাম পাইপ। কাচের নলের ভেতর জল দিয়ে তামাকের ধোঁয়া টানার ব্যবস্থা। ধোঁয়া আসে জলের ভেতর দিয়ে ফিল্টার হয়ে। একটি প্রাচীন ধারণা গড়গড়া বা নারকেল মালায় তৈরি খেলো হুঁকোর মধ্যে দিয়ে তাম্বাকু সেবন করিলে, কম নিকোটিন আসে। ফলে ক্ষতি কম হয়। গন্ধদার অম্বুয়ী তামাক, দা কাটা তামাক, সবই দেখেছি চোখে, চেখেও। ভালো লাগেনি। গড়গড়া ও হুঁকোর জল দিয়ে পেস্টিসাইড করা, গাছের পোকা মারার পদ্ধতি চোখে পড়েছে। আমাদের বাল্যকালে পেচ্ছাপে বসাকে কেউ কেউ যাই, হুঁকোর জল পাল্টে আসি বলতেন। বর্ধমানে কোনো কোনো জায়গায় পায়খানা, পেচ্ছাপ যাওয়াকে বা পায়খানা, পেচ্ছাপ বসাকে পায়খানে ফিরে আসি বলা হত। হিন্দি বলয়ে পায়খানা করাকে টাট্টি করা বলার পাশাপাশি ‘চলে ময়দান’, ‘ময়দান হো কে আয়ে’ বলার রেওয়াজ আছে। তখনও এত এত ‘পটিময়’ পৃথিবী হয়নি। গু, মুত, পোঁদ, নুনু, হেগো, মুতো, সকড়ি— এইসব কথা বলার রেওয়াজ ছিল সর্বত্র। এখন সবাই বলেন ‘পটি’। হাগা শব্দটি কি লোপ পেল বাঙালি জিভ থেকে? সেইসঙ্গে মুত, মূত্রত্যাগ ইত্যাদি শব্দ-লহরিও।

ইলাহাবাদে দেখেছি পুরানা কাটরার আহিরপল্লী— গোয়ালা— যাদবপল্লীতে পুরুষরা তো বটেই, ছোটো ছেলে-মেয়েরা আবশ্যিকভাবে ‘ময়দান ফেরেন’। ইলাহাবাদ কোম্পানি বাগ বা কম্পানি বাগে হাগতে যেতেন আহির পুরুষ, নারী নির্বিশেষে, লোটায় পানি— জল ভরে। রাত-বিরেতে কোম্পানি বাগে হাগতে— পেট খুলাসা না করতে গিয়ে তাঁরা পরেটে বসতেন। আহির— আভীর বা যাদবপল্লীর ভেতরই খোলা মাঠ— ‘পরেট’। সেখানে যাদবদের গরু-মোষ থাকে। থাকে পাশিয়ানা— পাশিদের দুধেলা ছাগল, খাসি, পাঁঠা। আহিররা খুব বেশি ছাগল পোষেন না। গরু আর মোষেই তাঁদের এক্তিয়ার। বকরা-বকরি— পাঁঠা-ছাগল পোষেন কাহার, পাশি চামাররা। বর্বরি ছাগল তো ইলাহাবাদেই আমি প্রথম দেখি। দাড়িহীন, হরিণ হরিণ চেহারার বর্বরি ছাগল নিয়ে বহু কথা বলা যায়। আবুল ফজল নির্মিত ‘আইন-ই-আকবরি’-তে আছে বর্বরি ছাগলের মাংসের কথা। বর্বরি ছাগলের দুধে কোনো বদ গন্ধ নেই। সাধারণভাবে ছাগলের দুধে একটু ‘ছাগল ছাগল’ বদ গন্ধ— কুবাস থাকে। বেশি দিন ধরে টানা এই দুধ খেয়ে গেলে গায়েও নাকি— মানে যে ছাগল দুধ খাচ্ছে, তার গায়ে একটা বাজে গন্ধ তৈরি হয়। ছাগদুগ্ধ— ছাগীদুগ্ধ অতীব উপকারী। বিশেষ করে পেটের রোগে— আমাশাতে। পঞ্চাশ থেকে আশির দশকেও দেখেছি হাতে উলকিদার, কানে নাকে পেতলের নাকফুল দেওয়া রঙিন খাটো ঘাগরা, পায়ের পাতায় পাঁইজোড় নয়তো খাড়ু পরা রহস্যময় রমণীরা চোখে সুরমা বা কাজল টেনে হাজির হতেন বাড়ি বাড়ি। সঙ্গে তাঁদের একটি বা দুটি বেশ বড়ো, উঁচু, তাগড়া পাটনাই ছাগী। এই ছাগী দুগ্ধ ও মোষের দুগ্ধ সব সময়ই গরুর দুধ থেকে দামি। আবার ভাগলপুরী গাইয়ের দুধের দাম আরও আরও অনেক বেশি। ছাগীদুগ্ধ সবচেয়ে দামি। তার থেকেও দামদার গাধার দুধ, যা বসন্ত রোগের চিকিৎসায় লাগে বলে শুনেছি। আর দামি উটের দুধ। উটের দুধের স্বাদ অনবদ্য। কথায় বলে, ‘কলকাতায় পয়সা দিলে বাঘের দুধ পাওয়া যায়’। এই তথ্য কত দূর সত্য জানা নেই। বাঘের দুধ কোথায় কীভাবে, কখন বিক্রি হবে, কেউ কী জানে! তো সেই দুধ বিক্রেতারা, তাঁরা কি আদপেই আছেন, যাঁরা বাঘের দুধ বিক্রি করতে পারবেন? বাড়ি বাড়ি দুধেল জোড়া ছাগী নিয়ে দুই জন রমণী। তাঁদের গাত্রবর্ণ তামাটে। কপালে, হাতে, থুতনিতে উল্কি। তাঁরা দুধ বিক্রি করেন, দুইয়ে— চোখের সামনে। যাতে না ভেজাল নিয়ে কেউ কখনও কথা বলতে না পারেন, মন্তব্য করতে না পারেন। বহু সময়েই এইসব দুগ্ধদাত্রী ছাগীদের ভরাট— দুগ্ধ আক্রান্ত স্তন কাপড়ের ঢাকনি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। সেইসব ঢাকনি কেন রাখা হয় জানতে চাইলে তাঁরা প্রথম প্রথম এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত বলে ওঠেন, যাতে ‘নজর’ না লাগে কারও। পরে লক্ষ করে দেখেছি এইসব রমণীরা, ছাগল, ছাগলের স্তন সমানভাবে যত্নে রাখেন। নিজে নিজে হাঁটতে হাঁটতে কী আবিষ্কার করেন বারবেরিয়ান বা বর্বরের সঙ্গে সঙ্গে যেকোনো যোগাযোগই নেই বর্বরি ছাগলদের। ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ নামে কালো— কুচকুচে কালো পাঁঠার মাংসের স্বাদ অপূর্ব। পাঁঠারা— এইসব পাঁঠারাই কালীপুজোর দিনে ‘বলি’ হিসাবে প্রশস্ত। রাজ্যপাল টি এন সিং— ত্রিভুবন নারায়ণ সিং ছিলেন চমৎকার মানুষ। তিনি রাজভবনে— গভর্নর হাউসে পুষেছিলেন ইজরায়েলি ছাগল। সেই ইজরায়েলি ছাগল চুরি গেল রাজভবন থেকে। বহু তদন্ত হল কিন্তু না ফেরত পাওয়া গেল ইজরায়েলি ছাগল, না ধরা পড়ল ছাগল-চোর। এই ঘটনাটি নিয়ে তখনকার বাংলা সংবাদপত্রে খুবই ছবিটবি দিয়ে খবর হয়। ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় এই ছাগল চুরি নিয়ে চমৎকার কার্টুন আঁকেন অমল— অমল চক্রবর্তী। আজও অনেকের মনে আছে সেই কার্টুন কথা। ত্রিভুবন নারায়ণ সিং ছিলেন নরম মনের মানুষ। রাজভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি নাকি সত্যি সত্যি কেঁদে ফেলেছিলেন।

Powered by Froala Editor