নিজস্ব সংস্থার রকেটে চড়েই মহাকাশ-পর্যটন রিচার্ড ব্র্যানসনের

বিশ শতক ছিল মহাকাশ অভিযানের যুগ। আর এই একুশ শতক হতে চলেছে মহাকাশ পর্যটনের যুগ। অন্তত এই শতাব্দীর শুরু থেকেই এই কথা বলে আসছেন বেশ কিছু উদ্যোক্তা। কিন্তু সত্যিই কি কোনোদিন মহাকাশের বুকে ছুটি কাটাতে যেতে পারবে মানুষ? অন্তত ৭১ বছর বয়সী উদ্যোক্তা রিচার্ড ব্র্যানসনের মহাকাশ ভ্রমণ সেই সম্ভাবনাকেই উস্কে দিল আবারও। প্রতিদ্বন্দ্বী উদ্যোক্তা জেফ বেজোসকে পিছনে ফেলে ব্র্যানসন আগেই উড়ে গেলেন মহাকাশের বুকে। আর তিনিই প্রথম উদ্যোক্তা, যিনি নিজের কোম্পানির রকেটে চড়েই মহাকাশে পৌঁছলেন।

রবিবার নিউ মেক্সিকো মরুভূমি থেকে মহাকাশে রওয়ানা হল ভার্জিন গ্যালাক্টিক কোম্পানির রকেট। আর মহাকাশযানের মধ্যে ৫ জন সহচরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন খোদ কোম্পানির কর্তা রিচার্ড ব্র্যানসন। এর আগে ব্লু অরিজিন কোম্পানি কর্তা জেফ বেজোস জানিয়েছিলেন তিনি নিজেই মহাকাশযানে চেপে রওয়ানা দেবেন। আগামী ২০ জুলাই তাঁর মহাকাশযাত্রার দিন স্থির করা হয়েছে। কিন্তু তার আগেই সেই উদাহরণ তৈরি করে দিলেন ব্র্যানসন। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮৮ কিলোমিটার উপরে উঠে বেশ কয়েক মিনিট অপেক্ষা করেন ব্র্যানসন ও তাঁর সহযাত্রীরা। এবং শেষ পর্যন্ত সফলভাবে ফিরেও এসেছেন। ব্র্যানসনের এই যাত্রা আগামীদিনে সাধারণ যাত্রীদের মনে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলেই মনে করছেন তিনি।

এর আগে অবশ্য ভার্জিন গ্যালাক্টিকের একাধিক উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে। আর এবারের যাত্রা নিয়ে তেমন কোনো প্রস্তুতিও ছিল না। ফলে খানিকটা চিন্তায় ছিলেন সকলেই। এমনকি ব্র্যানসনের এই যাত্রার কথা শুনে উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে ছুটে গিয়েছেন মহাকাশ পর্যটনের জগতের কিংবদন্তি এলোন মাস্ক। যাত্রার সাফল্য কামনা করে আগেই টুইট করেছিলেন জেফ বেজোস। যাত্রা সফল হওয়ায় অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর যাত্রা যে আরও বেশ কিছুটা উন্নত ও নিরাপদ হতে চলেছে, সেই কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি বেজোস।

সবকিছু ঠিক থাকলে আর ৫ বছরের মধ্যেই শুরু হয়ে যেতে চলেছে মহাকাশ পর্যটন। ইতিমধ্যে তার জন্য অগ্রিম টিকিট বুকিং শুরু করে দিয়েছে ভার্জিন গ্যালাক্টিক কোম্পানি। ব্লু অরিজিন কোম্পানি অবশ্য জানিয়েছে বেজোস মহাকাশ থেকে সফলভাবে ফিরে এলেই টিকিট বিক্রি করবে তারা। ভার্জিন গ্যালাক্টিকের একটি টিকিটের দাম ২.৫ লক্ষ মার্কিন ডলার। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাড়িয়ে যেতে এটুকু খরচ করতে রাজি অনেকেই। ইতিমধ্যে ২০০টির বেশি টিকিট বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। তবে প্রত্যেকেই অপেক্ষা করে আছেন এলোন মাস্কের স্পেস-এক্স কোম্পানির দিকে। তিনি যদিও এখনও স্পষ্টভাবে কিছুই জানাচ্ছেন না। তবে তাঁর কোম্পানির মহাকাশযান শুধু পৃথিবীর কক্ষপথেই থেমে থাকবে না বলে মনে করছেন অনেকে। এমনকি শুক্র বা মঙ্গল গ্রহেও ঘুরে আসতে পারবেন সাধারণ মানুষ, এমনটাও শোনা যাচ্ছে নানা সূত্রে। তবে এই সমস্ত জল্পনা বাস্তবায়িত হতে কয়েক বছর সময় তো লাগবেই।

আরও পড়ুন
কল্পনার পর সিরিশা, ১৮ বছর পর আবার মহাকাশযাত্রায় ভারতীয় মহিলা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
আগাগোড়া কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট, মহাকাশে পাঠাচ্ছে ফিনল্যান্ড