দাবানলে বিলুপ্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দেখা মিলল অস্ট্রেলিয়ার পিগমি পসামের

অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী দাবানলের পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ এক বছর। খানিকটা হলেও এবার আশ্বস্ত হলেন অস্ট্রেলিয়ার বনদপ্তর কর্মীরা। গত এক বছরে এই প্রথমবারের জন্য তাঁরা খুঁজে পেলেন একটি পিগমি পসামকে। তাও পুরোপুরি ঝলসে যাওয়া ক্যাঙ্গারু দ্বীপে। পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্র এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব মুছে গিয়েছে ক্যাঙ্গারু দ্বীপ থেকে, এমনটাই ধরে নিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ভুল প্রমাণিত হল তাঁদের ধারণা।

পিগমি পসাম নামের ছোট্ট এই প্রাণীটির মূলত আবাসস্থল হল তৃণভূমি। অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে ক্যাঙ্গারু দ্বীপে পুরোপুরিই যা ছাই হয়ে গিয়েছিল বছরখানেক আগে। প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ হেক্টর অরণ্য পুড়েছিল শুধুমাত্র ২০১৯-২০ সালের ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি বন্যপ্রাণ। যার মধ্যে শুধু ৬১ হাজার কোয়ালাই প্রাণ হারিয়েছিল। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রাণীবিদ প্যাট হজেন্স জানান, অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী পরিসংখ্যান অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ায় প্রাপ্ত মোট প্রজাতির ৮৮ শতাংশই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ক্যাঙ্গারু দ্বীপ থেকে। যে তালিকায় জায়গা নিয়েছিল পিগমি পসামও। ক্যাঙ্গারু দ্বীপ ছাড়া মাত্র ১০ গ্রাম ওজনের ছোট্ট এই প্রাণীটির দেখা মেলে তাসমানিয়া, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং ভিক্টোরিয়াতে। বনকর্মীদের পরিকল্পনা ছিল ক্যাঙ্গারু দ্বীপে অন্য জায়গা থেকে পিগমি পসাম এনে সংরক্ষণ করার। তবে তার আগেই প্রাকৃতিক নিয়মেই যে নিজের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার কথা জানান দিল ক্ষুদ্রতম স্তন্যপায়ী।

তবে অস্তিত্ব টিকে থাকলেও রীতিমত ঝুঁকি নিয়েই বেঁচে রয়েছে এই প্রজাতি। তৃণভূমি অবলুপ্ত হওয়ায় বন-বিড়াল ও অন্যান্য শিকারীদের চোখ এড়িয়ে লুকিয়ে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইল্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এবং ইকোলজিস্টরা সর্বতভাবে হাত লাগিয়েছেন ছোট্ট এই প্রাণীর বাসস্থান ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে পুরো ক্যাঙ্গারু দ্বীপের পরিবেশ আগের অবস্থায় ফিরে যেতে এখনও বেশ কয়েক বছর থেকে দশক অবধি সময় লাগতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা... 

Powered by Froala Editor

More From Author See More