দল বেঁধে ঠাকুর দেখছেন প্রবীণরা, পুজোর কলকাতা সাক্ষী রইল দৃশ্যের

পাড়ায় পাড়ায় বেজে উঠেছে মাইক, শোনা যাচ্ছে ঢাকের বোল। হ্যাঁ, পুজো শুরু হয়ে গেছে। বাঙালির অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই উৎসবে অংশ নিতে ভিড় বাড়ছে মণ্ডপে মণ্ডপে। কলকাতা-সহ মফঃস্বলের প্যান্ডেলেও জনজোয়ার। কিন্তু যাঁদের বয়স হয়েছে, ঠাকুর দেখতে বেরোতে অসমর্থ, তাঁদের কাছে কীভাবে ধরা যায় পুজো? উৎসবের এই পাঁচটা দিন কি ঘরে বসেই কাটিয়ে দেন তাঁরা? কলকাতার ভিড় ঠেলে প্রতিমা দর্শন হয়তো তাঁদের কাছে নেহাৎ স্বপ্নমাত্র।

অথচ সেই স্বপ্নকেই গত ১০ বছর ধরে সত্যি করে তোলার চেষ্টা করছে ‘রিয়ালটেক নির্মাণ’ সংস্থাটি। কলকাতার বিভিন্ন পাড়ায় তাঁরা যোগাযোগ করেন প্রবীণদের সঙ্গে। বাদ যান না বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দারাও। তারপর, পঞ্চমীর দিন সবাইকে কলকাতার ঠাকুর ঘুরিয়ে দেখান তাঁরা।

২০১০-এ শুরু হয়েছিল এই উদ্যোগ। এবার দশম বর্ষে পদার্পণ করল ‘রিয়ালটেক দুর্গা’। সংস্থাটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির গুপ্তের কথায়, যাঁরা বার্ধক্যে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোই সবার কর্তব্য। পুজোর সময় সেইসব মানুষদের সাধ্যমতো আনন্দ দেওয়ারই চেষ্টা করছেন তাঁরা।

আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সামনের মাঠে গতকাল সকালে জড়ো হন প্রবীণরা। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল ভলভো বাসের। সেই বাসে করেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে। সেই তালিকায় ছিল মানিকতলা চালতা বাগান, কাশী বোস লেন, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, মুদিয়ালি, একডালিয়া এভারগ্রিন ইত্যাদি। বয়স্কদের যাতে শারীরিক সমস্যা না হয়, সে-জন্য ছিল চিকিৎসার ব্যবস্থাও।

সে এক অপূর্ব দৃশ্য। ভিড়ের মধ্যেও, বয়স্করা ধীরে ধীরে হেঁটে চলেছেন পরস্পরের হাত ধরে। পুজোয় ঠাকুর দেখার আনন্দ উপভোগ করছেন তাঁরাও। ভিড় ঠেলে আর হয়তো বেরনো হবে না অনেকেরই। পঞ্চমীর সকাল-দুপুরে তাঁদের ঠাকুর দেখার এই সুপ্ত ইচ্ছেটুকুকেই ১০ বছর ধরে পূরণ করে চলেছে রিয়ালটেক নির্মাণ।

সত্যিই তো, পরবর্তী প্রজন্ম দায়িত্ব না নিলে, কেই বা নেবে!

Latest News See More