আশিয়ানের বৈঠকেও অনুচ্চারিত রাজবন্দিদের মুক্তি-প্রসঙ্গ, ক্ষুব্ধ মায়ানমারের নাগরিকরা

তিন মাস গড়াতে চলল। এখনও অশান্ত মায়ানমার। গত ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছিল মায়ানমারে। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে একের পর এক নৃশংস অভিযান চালিয়ে গেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। এই সহিংসতার বিহিত করতেই গত শনিবার অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আশিয়ান)-এর বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মায়ানমানের জুন্টা প্রধান। তবে মুখে শান্তির কথা বললেও, তা বাস্তবায়িত করতে কোনোরকম নীল-নকশা উপস্থাপন করতেই ব্যর্থ হল বৈঠক। আর এই বিষয় নিয়েই পুনরায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মায়ানমারের সাধারণ মানুষ।

ইন্দোনেশিয়ার জার্কাতায় আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন স্বয়ং জুন্টা প্রধান মিন অং হ্লাইং। তাঁর উপস্থিতিতেই পাঁচ দফায় সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয় আশিয়ান। তার মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা, মায়ানমারে আশিয়ানের রাষ্ট্রদূত সফর, বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা, সহিংসা সমাপ্তি-সহ রয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। তবে আশ্চর্যজনকভাবেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান সু কি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয় বৈঠকে। আর ঠিক এই প্রসঙ্গেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

এই মুহূর্তে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিক্ষোভকারীকে আটকে রাখা হয়েছে মায়ানমারের কারাগারে। তাছাড়াও গত তিন মাসে প্রাণ গেছে সাড়ে ৭৫০-এরও বেশি মানুষের। তাঁদের জীবনের প্রতিও কি ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির? ঠিক এই প্রশ্নই তুলছেন বার্মিজ নাগরিকরা। অভিযোগ শুধুমাত্র বৈশ্বিক মানরক্ষার জন্যই আয়োজিত হয়েছিল এই বৈঠক। এই মেকি সাহায্যের যে কোনো দরকার নেই, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিষ্কার করে দেন একাধিক বিরোধী ব্যক্তিত্ব।

তবে এখানেও বৃহত্তর স্বার্থ লুকিয়ে রয়েছে মায়ানমার শাসকের। এমনটা মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, বিগত তিন মাস ধরে চলা ধর্মঘট এবং আন্দোলনের ফলে বেশ বড়োসড় ধাক্কা খেয়েছে মায়ানমারের অর্থনীতি। অর্থনৈতিক সেই হাল ফেরাতেই সাধারণ মানুষকে সান্ত্বনা দেওয়ার এই প্রয়াস জুন্টার। তবে তাতে যে অবস্থানকারীদের মন গলছে না, তা বোঝা যাচ্ছে স্পষ্টভাবেই। গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা…

আরও পড়ুন
গণতন্ত্রের সমর্থনে গান গেয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা মায়ানমারের কিশোরী

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, স্বৈরাচারের প্রত্যক্ষ উদাহরণ মায়ানমারে

More From Author See More