মঙ্গলেও অভাব হবে না অক্সিজেনের, পথ দেখাচ্ছেন লিসবনের গবেষকরা

মঙ্গলগ্রহেও গড়ে উটেছে মানবসভ্যতা। বিভিন্ন সাই-ফাই সিনেমা কিংবা কল্পবিজ্ঞানের গল্পে এই ছবি আমরা দেখেছি বার বার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহে পা রাখতে পারেনি মানুষ। আর সেটা যদি সম্ভবও হয়, রুক্ষ প্রান্তরে আস্ত সভ্যতা গড়ে তোলা তো মুখের কথা নয়। জল এবং অক্সিজেনের অভাবই মানুষের বসবাসের মূল প্রতিবন্ধকতা সেখানে। তবে এই সমস্যারও এবার সমাধান খুঁজে বার করলেন গবেষকরা। হ্যাঁ, মঙ্গলেও (Mars) এবার অক্সিজেন (Oxygen) তৈরির অভিনব পন্থার হদিশ দিলেন বিজ্ঞানীরা। 

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যেমন প্রায় ৮০ শতাংশ নাইট্রোজেন রয়েছে, তেমনই মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল প্রায় সম্পূর্ণভাবে তৈরি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাধ্যমে। হ্যাঁ, মঙ্গলের হাওয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ প্রায় ৯৫ শতাংশ। এই কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে ভেঙেই অক্সিজেন তৈরির পরিকল্পনা করেছেন গবেষকরা। আর অক্সিজেন উৎপাদনে তাঁদের হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে প্লাজমা। 

আয়নিত কণার সমন্বয়েই তৈরি হয় প্লাজমা। উচ্চশক্তির প্লাজমা শুধু বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রই নয়, রসায়নেও ব্যবহার করা যায় অনায়াসেই। প্লাজমার স্রোতে বিপুল পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত থাকায় তা ভেঙে ফেলতে পারে পরমাণুর বন্ধন। অক্সিজেন উৎপাদনেও সেই পথেই হাঁটছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম ‘ইন-সিটু অক্সিজেন জেনারেশন’। ইলেকট্রনের স্রোতের সঙ্গে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সংঘর্ষে প্রথমে তৈরি হয় কার্বন-মোনোঅক্সাইড, পরবর্তীতে তা রূপান্তরিত হয় কার্বনে। অন্যদিকে প্লাজমার স্রোত শক্তি হারিয়ে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন সরবরাহ করে অক্সিজেন পরমাণু থেকে অণু তৈরিতে। 

লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কো গুয়েরা জড়িত ছিলেন এই গবেষণার সঙ্গে। শুধু তাত্ত্বিকভাবেই নয়, বাস্তবেও এই পদ্ধতিতে অক্সিজেন তৈরির নীলনকশা তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের গবেষকদের সঙ্গে জোট বেঁধে চলছে ব্যাপক মাত্রায় অক্সিজেন তৈরির জন্য এই যন্ত্রের নির্মাণের প্রচেষ্টা। প্রযুক্তিগত জট কাটলে আগামীতে মঙ্গল অভিযানে নির্ভাবনায় অক্সিজেন পাবেন মহাকাশচারীরা। মঙ্গলের মাটিতে বসতি স্থাপনের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে মানুষ…

Powered by Froala Editor

Latest News See More