করোনা কেড়ে নিল প্রাণ, প্রয়াত ‘লিটল মারমেড’, ‘দ্য লায়ন কিং’-এর অ্যানিমেটর

২০২০ যেন বিভীষিকা। ২০২০ একের পর এক দুঃসংবাদ হাজির করে চলেছে পৃথিবীর সামনে। গতকাল প্রয়াত হলেন অ্যানিমেশন শিল্পী অ্যান সুলিভান। বয়স হয়েছিল ৯১। কোভিড-১৯ এর শিকার ডিসনি’র এই বিখ্যাত অ্যানিমেটর। এদিন উডল্যান্ড হিল-বেসড ক্যাম্পাসের তরফ থেকে তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়। এই নিয়ে তৃতীয়বার অবসরপ্রাপ্ত কোনো অ্যানিমেশন শিল্পীর প্রাণ নিলো কোভিড-১৯।

তাঁর বড়ো হয়ে ওঠা নর্থ ডাকোটার ফার্গোতে। পরে বোনের সঙ্গে চলে যান ক্যালিফোর্নিয়ায়। প্যাসিডোনিয়ার, আর্ট সেন্টার কলেজ অফ ডিজাইনে সম্পূর্ণ করেন স্নাতক স্তরের পড়াশোনা। ১৯৫০ সালে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি নেন ডিসনিতে। তবে মাঝে কর্মবিরতি নিয়েছিলেন, সন্তানদের জন্য পরিচর্যার জন্য। ১৯৭৩-এ আবার ফিরে আসেন শিল্পজগতে। কাজ নেন ফিল্মনেশন এবং টেলিভিশন কোম্পানি হান্না বারবারাতে। ৮০-র দশকে ডিজনিতেই যোগ দেন আবার। ২০০৪-এ অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি।

তাঁর তৈরি করা ছবিগুলোয় প্রাণের সঞ্চার মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। অ্যানিমেশনের মধ্যে দিয়ে নতুন পৃথিবীর সন্ধান দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আঁকা, অলিভার এন্ড কোম্পানি (১৯৮৮), লিটল মারমেড (১৯৮৯), রোভার ডেঞ্জারফিল্ড (১৯৯১), কুল ওয়ার্ল্ড(১৯৯২) ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল চলচ্চিত্র জগতে। তাঁর, দ্য লায়ন কিং (১৯৯৪), হারকিউলিস (১৯৯৭), টারজান (১৯৯৮), ফ্যান্টাসিয়া (২০২০) দেখেননি, এমন মানুষ নেই বললেই চলে। যেকোনো চলচ্চিত্রপ্রেমীর কাছে অমূল্য এগুলি সম্পদ। ২০০৪-এ, হোম অন দ্য রেঞ্জের কাজেও সেল-পেন্টার হিসাবে জড়িয়ে ছিল তাঁর নাম।

অবসর গ্রহণের পর মোশান পিকচার এন্ড টেলিভিশন ফান্ডের সদস্য হয়েছিলেন। ওই সংস্থার বর্তমান প্রধান ডিনা কুপারস্টক জানান, কর্মচারীরা ‘গিগলস’ বলেই ডাকতেন সুলিভানকে। ডিনা জানান, হাসি-মজার মধ্যেই সকলকে মাতিয়ে রাখতেন তিনি। তাঁর ‘অদ্ভুত ছোঁয়াচে’ এই হাসির কাছে ধরাশায়ী হত সমস্ত সহকর্মীই।

তাঁর মৃত্যু সংবাদে শোকস্তব্ধ অ্যানিমেশন তথা সিনেমা জগৎ। হারিয়ে গেল অ্যানিমেশনের আদি প্রাণভোমরা। তবে থেকে যাবে তাঁর কাজগুলি। বছরের পর বছর অ্যানিমেশনের ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে মুগ্ধ করবে মানুষকে।