রাস্তার মধ্যেই ধোঁয়া পরীক্ষা, দূষণ নিয়ন্ত্রণে পথে নামছে কলকাতা পুলিশ

শুধু পলিউশন সার্টিফিকেট থাকলেই হবে না, এবার গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা হবে রাস্তার মধ্যেই। সম্প্রতি এমন উদ্যোগের কথাই জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। দূষণ নিয়ন্ত্রণের (Pollution Controll) জন্য এমন উদ্যোগ সারা দেশে এই প্রথম। কলকাতা পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবেশকর্মীরাও। করোনা পরিস্থিতিতে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাই বর্তমান সময়ে এমন উদ্যোগের বিশেষ প্রয়োজন ছিল বলেও মনে করছেন অনেকে।

এতদিন পর্যন্ত কেবল লালবাজারের বিশেষ বিভাগে গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করা হত। তাছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ ছিল না ট্রাফিক পুলিশদের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবছর ধরেই পুলিশ বিভাগে একাধিক দাবিপত্র পেশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। ২ বছর আগেই পুলিশ বিভাগ ধোঁয়া পরীক্ষার জন্য ২০টি পোর্টেবল যন্ত্র কিনেছিল। কিন্তু এতদিন সেসব কাজে লাগানো হয়নি। এর মধ্যে করোনা অতিমারী এসে পড়ায় অনেক মানুষই গণপরিবহণের ভিড় এড়িয়ে চলতে চাইছেন। ফলে রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরগাড়ির সংখ্যাও অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। পলিউশন সার্টিফিকেট পরীক্ষা করা হলেও তাতে বিশেষ ফল হচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ বর্তমানে ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর অনেক জায়গাতেই পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এটাও এখন এক কালোবাজারে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের।

ইতিমধ্যে শহরের নানা প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে ধোঁয়া পরীক্ষার কাজ। সেই কাজ আরও ব্যাপক স্তরে করার চেষ্টাই চলছে, এমনটাই জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক অরিজিৎ সিনহা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ২৫ জন ট্রাফিক গার্ডকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ২০ জনের কাছে আগে থেকে কিনে রাখা যন্ত্রগুলি রয়েছে। বাকি ৫ জনের জন্যও খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্র কেনার ব্যবস্থা করা হবে। এই কাজে পুলিশ বিভাগকে প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও। ট্রেনিং-এর দায়িত্বেও রয়েছেন তাঁরাই। অরিজিৎ সিনহা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে বেশ কয়েকজন ট্রাফিক গার্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শহরের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কর্মচারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এই উদ্যোগ আগামীদিনে সারা দেশকে পথ দেখাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

Powered by Froala Editor