বাঙালির তৈরি ভ্যাকসিনেই বাজিমাত? করোনা-রোধে আশা দেখাচ্ছেন কলকাতার সুমি

সুমি বিশ্বাস। জন্ম লেকটাউনে। বেড়ে ওঠা কলকাতাতেই। পরবর্তীকালে গবেষণা সূত্রে ঠিকানা হয় অক্সফোর্ড। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যলয়ই তাঁর অধ্যাপনার জায়গা হয়ে ওঠে তারপর। ২০১৭ সালে অধ্যাপনা এবং গবেষণার পাশাপাশিই ২০১৭ সালে তিনি ইংল্যান্ডের বুকে তিনি প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা স্পাইবায়োটেক। এবার এই বাঙালিনীর হাত ধরেই আসতে চলেছে করোনা ভাইরাসের নতুন টিকা।

তবে এই ভ্যাকসিন একেবারেই অভিনব। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের মতো এটি যেমন ভেক্টর ভ্যাকসিন নয়, তেমনই মডার্নার মেসেঞ্জার আরএনএ পদ্ধতিও ব্যবহৃত হয়নি এই ভ্যাকসিনে। বরং ‘সুপার-গ্লু’ পদ্ধতিকেই ভ্যাকসিন তৈরির কাজে বেছে নিয়েছেন ডঃ সুমি বিশ্বাস। বাজারে প্রচলিত হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিনের ওপর করোনাভাইরাসের স্ট্রেনকে প্রতিস্থাপিত করেই তৈরি হয়েছে এটি। তবে ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে চিহ্নিত করতে অসুবিধা হবে না দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার। ফলে দ্রুত তার প্রতিলিপি গঠনে সক্ষম হবে মানুষের ইমিউন সিস্টেম। হেপাটাইটিস-বি এর টিকায় ভাইরাসের প্রোটিন ব্যবহারের আগে তাকে নিষ্ক্রিয় করে নেওয়ায়, আশঙ্কাও থাকবে না কোনো।

তবে এখানেই অভিনবত্বের শেষ নয়। যেহেতু দু’রকম টিকার সংমিশ্রণে তৈরি হচ্ছে এই বিশেষ ভ্যাকসিন। তার কারণে শুধু করোনা নয়, বরং অন্যান্য যে কোনো রোগকেই প্রতিহত করতে সক্ষম হবে এই ভ্যাকসিন। তৈরি করবে ‘অ্যাডাপ্টিভ ইমিউন রেসপন্স’।

ইতিমধ্যেই প্রাণীদেহে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছেন তাঁরা। অনুমতি মিলেছে ট্রায়ালের জন্যেও। ভারতের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গেই ট্রায়ালের জন্য গাঁটছড়া বেঁধেছে স্পাইবায়োটেক। যা শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। ভারতেও এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল খুব শীঘ্রই হবে বলে জানিয়েছেন সুমি বিশ্বাস। তিন দফার এই ট্রায়াল সফল হলে করোনা-সহ অন্যান্য ক্রনিক রোগেরও সমাধান হাতের মুঠোয় চলে আসবে বলেই মনে করছেন ভাইরোলজিস্ট। পাশাপাশি হেপাটাইটিস-বি এর টিকা বহু আগে থেকেই উপলব্ধ হওয়ায়, তার ওপরে করোনার স্ট্রেন প্রতিস্থাপনে খরচও পড়বে অনেকটাই কম। সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে এই ভ্যাকসিনের দাম...

আরও পড়ুন
উপযুক্ত পরীক্ষা না করে ভ্যাকসিন প্রয়োগে বিপদের সম্ভাবনা, উদাহরণ রয়েছে ইতিহাসেই

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ক্যানসার ভ্যাকসিন ও তার শ্রেণীবিভাগ : আরোগ্য কতদূর?