এক কামরার ফ্ল্যাটে বসেই ‘পার্সিভারেন্স’ পরিচালনা করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধ্যাপক

বন্দনা ভার্মা। বিগত কয়েকদিনে সকলের কাছেই বেশ পরিচিত হয়ে গেছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই বিজ্ঞানীর নাম। মঙ্গলগ্রহে নাসার পাঠানো পার্সিভারেন্স রোভারের নেভিগেশন দেখভাল করছেন তিনিই। তবে একটি রোভার কন্ট্রোল শুধু নেভিগেশনেই সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও অনেক বিজ্ঞানীক কার্যকলাপ। আর সেখানেই বন্দনার সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক সঞ্জীব গুপ্ত।

তবে পার্সিভারেন্স রোভার কন্ট্রোলের মতো গুরুতর একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও নাসার মূল গবেষণাকেন্দ্রে অনুপস্থিত অধ্যাপক সঞ্জীব গুপ্ত। দক্ষিণ লন্ডনে লুইশামে তাঁর এক কামরার ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই বর্তমানে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী অধ্যাপক। যা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর পরিকাঠামোকে এনে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা।

ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জন্য পাঁচটি কম্পিউটার এবং অন্য আরও দুটি স্ক্রিন ব্যবহার করছেন তিনি। এবং আশ্চর্যজনকভাবে নিজের ফ্ল্যাটে থেকে সবটাই তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন একা হাতে। কৌতূহল জাগে, তাঁর মূল কাজটি কী? আর হঠাৎ এভাবেই কেন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কাজ চালাচ্ছেন তিনি?

বিষয় হল, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসায় জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরিতেই বাকি বিজ্ঞানীদের মতো কাজ করতেন তিনি। তাঁর বর্তমান ফ্ল্যাটের আয়তনের তুলনায় তিনগুণ বড়ো অফিসও ছিল সেখানে। তবে জরুরি দরকারে গতবছর লন্ডনের বাড়িতে ফিরেছিলেন সঞ্জীব গুপ্ত। তারপর কোভিড পরিস্থিতির জন্য আর ফেরা হয়নি ক্যালিফোর্নিয়ায়। তাই বাড়িতে থেকেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আরও পড়ুন
বিপর্যয়ের এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়েছিল ধ্বংসযজ্ঞ, উত্তরাখণ্ডের ছবি প্রকাশ করল নাসা

বর্তমানে মঙ্গলের জেজেরো ক্র্যাটারে অবস্থান করছে নাসার পার্সিভারেন্স রোভারটি। শুধু ছবি তোলাই তার একমাত্র কাজ নয়। মঙ্গলের এই প্রাচীন হ্রদের ভূপৃষ্ঠ থেকে বিভিন্ন নমুনার সংগ্রহ সে নিয়ে আসবে পৃথিবীতে। তারপর পরীক্ষা করা হবে, সেখানে অতীতে কোনো মাইক্রোবায়বাল প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা। উত্তর মিলতে পারে মঙ্গলের ভূতত্ত্ব এবং জলবায়ুর সম্পর্কেও। ভারতীয় অধ্যাপক পার্সিভারেন্সের এই কাজটারই তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তাঁর কম্যান্ডেই এই মার্স রোভার মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে সংগ্রহ করবে নমুনা, খুঁড়ে দেখবে মঙ্গলের ‘মাটি’।

এই কাজ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। তবে শুধু পার্সিভারেন্স মিশনই নয়। নাসার সঙ্গে আরও একটি চুক্তি হয়ে আছে তাঁর। ২০২৭ সালে মঙ্গল থেকে নিয়ে আসা পাথুরে নমুনাগুলির বিশ্লেষণের সঙ্গে জড়িত থাকবেন তিনি। সব মিলিয়ে নাসার এই মঙ্গল অভিযানে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য…

আরও পড়ুন
নাসার মঙ্গল-অবতরণের অন্যতম কাণ্ডারী দুই বাঙালি-সহ চার ভারতীয় বংশোদ্ভূত

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More