লিঙ্গসাম্যের তালিকায় ২৮ ধাপ পিছোল ভারত, এগিয়ে বাংলাদেশ-নেপালও!

তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। দেশজুড়ে নানা ইস্যুর মধ্যেই উঠে আসছে লিঙ্গসাম্যের প্রশ্নও। কিন্তু মহিলাদের সমান অধিকারের প্রশ্নটি কি আজও শুধুই প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ? ভারতবর্ষে লিঙ্গবৈষম্যের চেহারাটা যে দিনদিন অবনতির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, সেটাই উঠে এল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সমীক্ষায়। ১৫৬টি দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান প্রতি বছরই পিছনের দিকে থাকে। তবে এবছর আরও ২৮টি দেশের পিছনে চলে গিয়েছে ভারত। ২০২১ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী লিঙ্গসাম্যের নিরিখে ভারতের অবস্থান বিশ্বে ১৪০।

এই তালিকার ক্ষেত্রে মূলত তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের এগিয়ে আসার অনুপাত। দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ। এবং অবশ্যই শিক্ষাক্ষেত্রে মহিলাদের সুযোগ। তিনটি ক্ষেত্রেই ভারতের অবস্থান বেশ পিছনের দিকে। রাজনৈতিক পরিসরে মহিলাদের এগিয়ে আসার অনুপাত ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে অর্ধেক অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা তো বটেই, পার্লামেন্টে মহিলা সদস্যের সংখ্যাও কমেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরেই ভারতীয় রাজনীতিতে এই পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

সব মিলিয়ে ভারতে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা সুযোগ পান ৬২ শতাংশের কিছু বেশি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের সমানাধিকার আজও কল্পনার অতীত। তবুও যেটুকু উন্নত হয়েছিল পরিস্থিতি, করোনা অতিমারীর কারণে তাও অনেকটাই খারাপ জায়গায় চলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন সমীক্ষকরা। সংগঠিত ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের অংশগ্রহণ ২০ শতাংশের কিছু বেশি। এমনকি সকলের জন্য শিক্ষার কথা বলা হলেও আজও প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগটুকুও পান না অনেক মহিলাই। আর পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনা তো প্রায়শই ঘটছে।

অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কিন্তু অন্যান্য দেশের পরিসংখ্যান একদমই সে-কথা বলছে না। বরং প্রতিবেশি বাংলাদেশ লিঙ্গসাম্যের নিরিখে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থানে রয়েছে। সারা পৃথিবীতে তার অবস্থান ৬৫। নেপালের অবস্থান ১০৬। আবার ভারতেরও পিছনে রয়েছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৩। আর আফগানিস্তানের অবস্থান সারা পৃথিবীতে সবার শেষে। ১৫৬। সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়া লিঙ্গসাম্যের নিরিখে উপমহাদেশগুলির মধ্যে তৃতীয়। অন্যদিকে বিগত ৯ বছর ধরে প্রথম স্থান দখল করে রেখেছে আইসল্যান্ড। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই রিপোর্ট আরও একবার ভারতীয় সমাজের ক্ষয়িষ্ণু দিকটির ছবিই তুলে ধরল।

আরও পড়ুন
ফেক নিউজ ও ডিজিটাল ভারত : সারাবছরই ‘পয়লা এপ্রিল’ যে-দেশে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অস্বচ্ছতার কারণে ইভিএম বর্জন অধিকাংশ দেশের; কেন ‘জেদি’ ভারত?