ইছামতীতে দুই বাংলার প্রতিমা নিরঞ্জনে অনুমতি, দর্শকশূন্যই থাকবে পাড়

পাশাপাশি ভেসে চলেছে দুটি নৌকো। তার একটাতে ভারতের তেরঙ্গা পতাকা, আর অন্যটায় লাল-সবুজ। যেন কাঁটাতারের বেড়া টপকে হঠাৎ করে কাছাকাছি এসে পড়েছে দুই নৌকো। তবে অঘটন নয়। বরং প্রতিবছর নিয়ম করে এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকে টাকির ইছামতী নদী। আর এই মিলনের দৃশ্য দেখতে দুই বাংলার অসংখ্য মানুষ জড়ো হন নদীতীরে। দশমীর প্রতিমা নিরঞ্জনের সেই ঐতিহ্যও এবারে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিল। পুরসভার নির্দেশে বন্ধ হতে চলেছিল সেই অনুষ্ঠান। শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠীর দিনে জট ছাড়ল। পুজো উদ্যোক্তাদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত অনুমতি মিলল। তবে অনুষ্ঠান হলেও এবারে দর্শকশূন্য থাকবে ইছামতীর ঘাট।

করোনার কারণে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে এবছরের দুর্গাপুজোর আয়োজনে। আর তার মধ্যেই টাকি পুরসভা জানিয়েছিল, ঐতিহাসিক নিরঞ্জন অনুষ্ঠান স্থগিত রাখতে হবে এবছর। তবে শেষ পর্যন্ত পুজো উদ্যোক্তাদের অনুরোধ মেনে নিতে হল। তাছাড়া দুই বাংলার সম্প্রীতির প্রশ্ন তো ছিলই। টাকি পুরসভা জানিয়েছে, নিউ-নর্ম্যালের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই করতে হবে প্রতিমা নিরঞ্জন। আর এর জন্য একেকটি নৌকোয় তার আয়তন অনুযায়ী সর্বাধিক ১৫ থেকে ২০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন। সবাইকেই উপস্থিত হতে হবে মাস্ক পড়ে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। তবে কেবলমাত্র পুজো উদ্যোক্তারাই উপস্থিত থাকতে পারবেন। নদীর ধারে বসবে না মেলার পসরাও।

দুই বাংলার মিলিত সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে শেষ পর্যন্ত হলুদ সংকেত মিললেও দুই বাংলার মানুষের মনে খানিকটা অতৃপ্তি থেকেই যাবে। এই ঐতিহাসিক দৃশ্য দেখতে প্রতি বছর জড়ো হন দুই বাংলার মানুষের পাশাপাশি বিদেশিরাও। জমে ওঠে ব্যবসার ক্ষেত্রও। এবছর তার কিছুই হবে না। প্রতিমা নিরঞ্জন হবে নিয়ম মেনেই, কিন্তু জনমানসে তার ছাপ পড়বে না। অবশ্য এই মহামারি পরিস্থিতিতে টাকি পুরসভার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। পরের বছর আবারও উৎসবে মেতে ওঠার জন্য এবছর নিরাপত্তা মেনে চলা জরুরি।

Powered by Froala Editor