কানাডায় বাড়ি কিনতে লেগে যায় ৩০ বছর, কিন্তু কেন?

সাধারণ একটি দুই কামরার ফ্ল্যাট, আর তার দাম নাকি ১ মিলিয়ন ডলার! অবাক করা হলেও এটাই সত্যি। দেশটার নাম কানাডা (Canada)। বিগত কয়েক বছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে রিয়েল এস্টেটের দাম। আর এর মধ্যেই এসে পড়েছে কানাডার আরও একটা নির্বাচন। ৩৫ দিন একটানা প্রচারের পর আজ থেকে শুরু হল ভোটদান প্রক্রিয়া। এই নির্বাচনে কানাডার প্রতিটা দলের প্রচারের কেন্দ্রীয় বিষয়ই ছিল রিয়েল এস্টেটের (Real Estate) মূল্যবৃদ্ধি।

একটি গড়পরতা হিসাবে বলা হয়, কানাডায় নিজস্ব বাড়ি কিনতে একজন চাকুরিজীবির ৩০ বছর সময় লাগবে। এই ৩০ বছর ধরে বার্ষিক রোজগারের ১০ শতাংশ করে জমাতে পারলে তবেই তা সম্ভব। কিন্তু কেন এমন আকাশছোঁয়া দাম কানাডায়? স্থানীয় মানুষদের মতে, এখানে জমি-বাড়ির দাম সংক্রান্ত কোনো সরকারি নিয়মই নেই। পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হয় প্রোমোটার এবং রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে। তাঁরা যেমন দাম হাঁকেন, তেমনই দিতে বাধ্য হন ক্রেতারা। প্রোমোটারদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ এতটাই মজবুত যে একজন প্রোমোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বাকিরা আর কোনোভাবেই বাড়ি বিক্রি করতে রাজি হন না। ফলে বিষয়টা চাহিদামাফিক মূল্যবৃদ্ধিরও নয়। গত ০.২ বছরে কানাডায় সার্বিক মূদ্রাষ্ফীতির পরিমাণ ২ শতাংশ। আর সেখানে রিয়েল এস্টেটের দাম বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।

অন্যদিকে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন কানাডা সরকারের বিরুদ্ধে। বিগত কয়েক বছর ধরেই সারা পৃথিবীতে উদ্বাস্তু সমস্যা বেড়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলিই হয়ে উঠেছে শরণার্থীদের আশ্রয়। কিন্তু কানাডা সবসময় নিজের সীমান্ত বন্ধ রাখতে চায়। আর দেশে বাসস্থানের সংকট তৈরি করতে পারলে সেখানে শরণার্থীরা সহজে যাবেন না, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এই কৃত্রিম চাহিদা তৈরির ফলে এবার কানাডার মানুষই বিপদে পড়েছেন। তাই অবশেষে সমস্যা সমাধানের কথা সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে।

গতমাসের মাঝামাঝি হঠাৎই নির্বাচন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এভাবে এত কম সময়ের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণার বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। আসলে প্রতিপক্ষকে প্রচারের সুযোগ না দিয়ে লিবারাল পার্টির জয় নিশ্চিত করতে চেয়েছেন ট্রুডো, এমনটাই অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। তবে গত ৩৫ দিন ধরে ঝড়ের গতিতে চলেছে প্রচার। আর সেখানে বারবার উঠে এসেছে রিয়েল এস্টেটের মূল্যবৃদ্ধির কথা। নির্বাচনে যে দলই জয়ী হোক, এই সমস্যার কি সমাধান হবে? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সকলে।

আরও পড়ুন
তাপপ্রবাহে ১৩৫ জনেরও বেশি মৃত কানাডায়

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
গাঁজায় বিনিয়োগ ব্যর্থ, আশাহত কানাডার ব্যবসায়ীরা