স্বর্ণমন্দিরের তলায় গোপন সুড়ঙ্গ, রহস্য অমৃতসরে

জুতো রাখার জন্য বিশেষ র্যা ক তৈরির কাজ চলছিল স্বর্ণমন্দিরে। সম্প্রতি হরমিন্দর সাহেব বেসক্যাম্পের কাছে পুরনো কাঠামো ভেঙে নতুন করে এই নির্মাণের সময় বেরিয়ে এল একখণ্ড অজানা ইতিহাস। স্বর্ণ মন্দিরের তলায় লুকিয়ে গোপন সুড়ঙ্গ! বিষয়টি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে স্বর্ণমন্দিরে। অবিশ্বাস্য এই আবিষ্কারকে কেন্দ্র করে শেষ নেই জল্পনারও।

তবে শুধু সুড়ঙ্গই নয়, মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট নিচে দুটি প্রমাণ সাইজের কক্ষও খুঁজে পাওয়া গেছে স্বর্ণমন্দিরের নিচে। অন্যদিকে সুড়ঙ্গের গভীরতা প্রায় ২৫ ফুট। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বন্ধ করা হয় নির্মাণ কাজ। পরবর্তীতে স্বর্ণমন্দির কমিটি যোগাযোগ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। সেখানে বিশেষ বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে গোটা সাইটটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

তবে বিভিন্ন শিখ সংগঠনগুলির মধ্যে মতের অমিল হওয়ায় গতকাল অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খননের চেষ্টা করে স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল। তা প্রাচীন ঐতিহ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেই অভিযোগ মন্দির কমিটির। ওই বিশেষ শিখ সংগঠনের দাবি, পুরনো ইতিহাস এবং অপারেশন ব্লু স্টারের প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করবে প্রশাসন। বড়ো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আগেই বিষয়টি আয়ত্তে আনেন মন্দির কমিটির আধিকারিকরা। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের অফ ইন্ডিয়ার তরফে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, শিখ ইতিহাস সংক্রান্ত কোনো নথি কিংবা নিদর্শনের হদিশ পেলে, তা সংরক্ষণ করা হবে মন্দিরেই। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন করে এই গবেষণার কাজ শুরু করতে চলেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

এখনও পর্যন্ত কোনোরকম গবেষণা না হলেও, জোরালো হচ্ছে এই নির্মাণের সঙ্গে যে শিখ ধর্মের যোগসূত্রের তত্ত্ব। সুড়ঙ্গের গঠনের সঙ্গে বিভিন্ন শিখ মন্দিরের সাদৃশ্যের কথা সামনে এনেছেন অনেকেই। অন্যান্য শিখ স্থাপত্যের মতোই ছোটো ছোটো ইট দিয়ে তৈরি এই সুড়ঙ্গ। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সুড়ঙ্গের আনুমানিক বয়স প্রায় একশো বছরেরও বেশি। কিন্তু এমন এক গোপন নির্মাণের কারণ কী? এই প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর নেই কারোর কাছেই। তবে অনেকের অভিমত, এই সুড়ঙ্গ দিয়ে যাতায়াত করতেন মহারাজ রণজিৎ সিংহ। আখাড়া সঙ্গল ওয়াড়ার সঙ্গে এই সুড়ঙ্গের যোগ থাকতে বলেও মনে করছেন অনেকে।

আরও পড়ুন
২০১ বছরের জোড়া সুড়ঙ্গ প্রকাশ্যে, ইতিহাসে প্রথমবার রেড রোড খননের উদ্যোগ

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সুড়ঙ্গের ভিতরে ২৭০টি মৃতদেহ! প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চিহ্ন ফ্রান্সে