পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল জ্ঞানপীঠ, মৃত্যুতেও ‘বিজয়ী’ অক্কিতম

কয়েকদিন আগেই ৯৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিশিষ্ট মালায়ালি সাহিত্যিক অক্কিতম অচ্যুতন নাম্বুদিরি। আর তার দুই সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। যদিও তাঁর মৃত্যুর আগেই পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছিল বলে মরণোত্তর পুরস্কার হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। দেশের ৫৫তম জ্ঞানপীঠ পুরস্কারের প্রাপক অক্কিতম হয়তো সত্যিই মৃত্যুর ঊর্ধ্বে।

১৯২৭ সালে মাদ্রাজ শহরের কাছে জন্ম অক্কিতমের। দেশে তখন স্বাধীনতার হাওয়া উত্তাল। সেই ডাক ফিরিয়ে দিতে পারেননি অক্কিতমও। তবে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরপরই তিনি বুঝলেন, আরও অনেকটা কাজ বাকি। ততদিনে স্কুলজীবন শেষ করে কলেজে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত কলেজের পড়াশোনা বন্ধ করে লেগে গেলেন সমাজ গঠনের কাজে।

ছোটো থেকেই সংস্কৃত মহাকাব্যের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ ছিল অক্কিতমের। কিন্তু তথাকথিত নিচু জাত হওয়ায় তাঁকে সংস্কৃত পড়তে দেওয়া হত না। অক্কিতমের প্রথম লড়াই ছিল এই সামাজিক বিধির বিরুদ্ধেই। নিজে সংস্কৃত সাহিত্য পড়ে মালায়ালি ভাষায় তার অনুবাদও শুরু করেন। তাঁর অনুবাদে শ্রীমদ ভাগবৎ মালায়ালি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। অবশ্য সংস্কৃত সাহিত্য থেকে অনুপ্রেরণা নিলেও তিনি ছিলেন খাঁটি আধুনিক কবি। তাঁকেই মালায়ালি ভাষার প্রথম আধুনিক কবিও বলা হয়। কেরালা সাহিত্য অ্যাকাডেমি, সাহিত্য অ্যাকাডেমি সহ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। ২০১৬ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার। তবে সাহিত্যজীবনের সবচেয়ে বড়ো পুরস্কারটি মৃত্যুর পরেই ছুঁয়ে গেলেন অক্কিতম অচ্যুতন নাম্বুদিরি।

Powered by Froala Editor