এসির বিকল্প ‘সবুজ দেওয়াল’, শোষণ করে ৩১ শতাংশ তাপ

বাড়ির দেওয়াল ছেয়ে গেছে সবুজ লতানে গাছের আবরণে। না, আগাছা নয়। বরং, বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পরিবেশকে ভালোবেসেই অনেকে এই বিশেষ গাছটির চারা বসান বাড়িতে। ইউরোপে তো বটেই, সাম্প্রতিক কলকাতাতেও মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। আর এই বিশেষ বন্দোবস্তকে স্থাপত্যের ভাষায় বলা হয় ‘গ্রিন ওয়াল’ (Green Wall)। কিন্তু শুধুই কি সৌন্দর্য বৃদ্ধি? আমাদের অজান্তেই আরও একটি উপকার করে এই দেওয়াল। নিয়ন্ত্রণ করে বাড়ির তাপমাত্রা। এবার এমনটাই জানাল সাম্প্রতিক গবেষণা।

যুক্তরাজ্যের প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাসটেইনেবিলিটি হাবের গবেষকদের সমীক্ষায় উঠে এল এমনই তথ্য। ১৯৭০-এর দশকের আগে নির্মিত বিভিন্ন বাড়ির ওপর একটি বিশেষ সমীক্ষা চালিয়েছিলেন ব্রিটিশ গবেষকরা। প্রতিটি বাড়ির মূল পরিকাঠামো প্রায় একইরকম। ইট এবং কংক্রিট দিয়ে নির্মিত তাদের প্রাচীর। দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহ ধরে বাড়ি গুলিতে সূর্যের তাপশোষণের হার এবং তাপমাত্রার পরিমাপ নেন গবেষকরা। তাতেই স্পষ্ট ফুটে ওঠে তাপ নিয়ন্ত্রণে ‘গ্রিন ওয়াল’-এর ভূমিকা।

গবেষণায় দেখা যায় ‘গ্রিন ওয়াল’-যুক্ত বাড়িগুলিতে প্রায় ৩১.৪ শতাংশ কম তাপ শোষিত হয়েছে। পাশাপাশি এই বাড়িগুলিতে সারাদিনের গড় উষ্ণতাও আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির থেকে বেশ খানিকটা কম। বিশেষত, দিনের বেলায় তাপপ্রবাহকে বিশেষভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম এই ধরনের দেওয়াল। সম্প্রতি এই সমীক্ষা ও গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিল্ডিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে। 

পরিসংখ্যান বলছে যুক্তরাজ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ১৭ শতাংশের জন্য দায়ী সেখানকার বাড়ির শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা এয়ার কন্ডিশন মেশিন। সেখানে দেখতে গেলে শুধু তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণই নয়, গ্রিন ওয়ালের সৌজন্যে পরিবেশে বৃদ্ধি পায় অক্সিজেনের মাত্রা। শোষিত হয় কার্বন ডাই অক্সাইড। ফলে সামগ্রিকভাবে কার্বন নির্গমন কমিয়ে পরিবেশকে সুস্থ করে তোলে সবুজ দেওয়াল। 

আরও পড়ুন
কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমাতে নয়া প্রযুক্তি, জড়িয়ে দুই বাঙালি বিজ্ঞানী

২০৩০ সালের মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ গৃহস্থলি সংক্রান্ত কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কিছুদিন আগেই। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে ‘গ্রিন ওয়াল’-ই হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে আগামীতে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো…

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে পারে ‘ব্লু কার্বন সিঙ্ক’

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কার্বন নির্গমন করছে বিশ্বের ১০টি সংরক্ষিত অরণ্য, জানাল ইউনেস্কো