কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে পাথর তৈরির কারখানা আইসল্যান্ডে

পরিবেশ দূষণের (Environmental Pollution) সঙ্গে মোকাবিলার সবচেয়ে সহজ রাস্তা দূষক পদার্থগুলিকে পুনর্ব্যবহার করা। কিন্তু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে রয়েছে যে দূষক, সেই কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়? খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজেও যে লাগে না এই গ্যাস। তবে এই গ্যাসকে যদি সমাধিস্থ করা যায়, তাহলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে অনেকটা। সম্প্রতি আইসল্যান্ডের (Iceland) একটি কারখানায় শুরু হয়েছে তেমনই উদ্যোগ। হ্যাঁ, বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সংগ্রহ করে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে একেবারে মাটির নিচে। আর সেখানে সেগুলিকে পাথরে বদলে ফেলা হবে। বাতাসের দূষক কার্বন-ডাই-অক্সাইড পাথর হয়ে শুয়ে থাকবে মাটির নিচে।

দীর্ঘদিন ধরেই এমন পরিকল্পনা করে আসছিল সুইৎজারল্যান্ডের সংস্থা ক্লাইমেটওয়ার্কস এজি। ২০১৮ সালে প্রথম এই ধরনের পরিকল্পনার কথা জানায় পরিবেশ সংস্থাটি। তারপর ইউরোপের নানা জায়গায় মোট ১৬টি ছোটোবড়ো কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে আইসল্যান্ডের কারখানাটিই কাজ শুরু করল সবার আগে। গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় কারখানাটির। আর এই কারখানাকে ঘিরে ইতিমধ্যে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই। প্রথমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে বাতাস থেকে আলাদা করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা হবে। তারপর সেই কার্বনেটেড জলকে মাটির নিচে পাঠিয়ে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পাথরে পরিণত করা হবে। সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রতি বছর ৪ হাজার টন কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে পাথরে পরিণত করতে পারবে এই কারখানা। যার নাম রাখা হয়েছে ওরকা। সারা পৃথিবীর বার্ষিক কার্বন অপসারণের তুলনায় এই পরিমাণ খুবই সামান্য। কিন্তু একটিমাত্র কারখানা যদি এই কাজ করতে পারে, তাহলে এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বায়ুদূষণের মোকাবিলা করা যে একেবারেই অসম্ভব নয়, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রতি বছর বাতাসে ৩২ বিলিয়ন টন কার্ব-ডাই-অক্সাইড অপসারিত হয়। আর এই বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণেই ক্রমশ বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। বলা বাহুল্য, এটাই পরিবেশ দূষণের একমাত্র সমস্যা নয়। কিন্তু অবশ্যই সবচেয়ে বড়ো সমস্যা। কার্বনের পরিমাণ কমিয়ে ফেলা গেলে অন্যান্য সমস্যাও অনেকটাই কমবে। আর আগামী ১০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর মোট কার্বন নিঃসরনের ৫০ শতাংশই এই পদ্ধতিতে সমাধিস্থ করা যাবে বলে আশাবাদী ক্লাইমেটওয়ার্কস সংস্থার কর্তারা।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কার্বন শোষণের চেয়ে নির্গমন বেশি, আমাজনের শেষের শুরু?