সমুদ্র থেকে কার্বন অপসারণ করবে সার্চ ইঞ্জিন, অভিনব উদ্যোগ অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তিবিদের

আজকাল আমাদের পকেটে ঘোরে চলমান বিশ্বকোষ। কোনোকিছু জানার দরকার হলেই আমরা ইন্টারনেটে সার্চ করি। আপাতভাবে মনে হতে পারে, সার্চ ইঞ্জিনের এছাড়া অন্য কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু ধরুন আপনি ইন্টারনেটে কিছু সার্চ করলেন, আর সেখান থেকেই কিছুটা অর্থসাহায্য পেলেন পরিবেশকর্মীরা। আর তাঁরা সেই টাকা কাজে লাগলেন সমুদ্রের বুকে জমে থাকা জঞ্জাল অপসারণে। এমনই অভিনব উদ্যোগ নিলেন অস্ট্রেলিয়ার এক প্রযুক্তিবিদ। তৈরি করেছেন সার্চ ইঞ্জিন 'ইকোরু'।

আরও পড়ুন
পেট্রোলের বিকল্প সমুদ্র-শৈবাল, পরিবেশ দূষণ কমাতে নতুন জ্বালানির হদিশ

পরিবেশ বাঁচাতে আজকাল ছোট ছোট উদ্যোগ নিচ্ছেন অনেকেই। তবে প্রকৃতির বুকে যে পরিমাণ কার্বন জমেছে, তাকে সরিয়ে ফেলতে বেশ বড় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। আর তার জন্য তো খরচও প্রচুর। পৃথিবীর বড় বড় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো আর কতটুকুই বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে? এইসব ভাবনাই ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তিবিদ অ্যাটি বাকুশের মাথায়। পরিবেশ বাঁচাতে তাঁর উদ্যোগ রীতিমতো অভিনব। আর সবথেকে বড় কথা, অনায়াসে এই উদ্যোগে সামিল হতে পারেন আপনিও।

আরও পড়ুন
সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে মারণ রোগ, স্পঞ্জের অসুখে বিধ্বস্ত মানুষও

কুয়াললামপুরে থাকার সময় বাকুশ ও তাঁর স্ত্রী অ্যালিসন প্রত্যক্ষ করেছিলেন পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা। আর তখনই তাগিদ অনুভব করেছিলেন কিছু করার। বেশ কিছু পরিবেশবান্ধব সংগঠনের কথা জানতেন তাঁরা। তবে অর্থাভাবে ধুঁকছিল সেগুলো। জানুয়ারি মাসে আত্মপ্রকাশ করে 'ইকোরু'। আর এই সার্চ ইঞ্জিনের প্রতিটা সার্চের বিনিময়ে সমুদ্রের বুকের থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এক পাউন্ড জঞ্জাল। তবে শুধু জঞ্জাল অপসারণই নয়, কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিকল্প শক্তি উৎসের দিকেও জোর দিচ্ছেন বাকুশ। গুগল সার্চ ইঞ্জিন যেখানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১১০০ পাউন্ড কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে, সেখানে 'ইকোরু'র মত পরিবেশবান্ধব সার্চ ইঞ্জিন যথেষ্ট আলোচনার দাবি রাখে। এমনকি শক্তির অপচয় কমাতে বিশেষ ডিজাইন ব্যবহার করে এই সার্চ ইঞ্জিন।

আরও পড়ুন
এবার সমুদ্র থেকে প্লাস্টিক তুলবে এই নয়া যন্ত্র

ইতিমধ্যে এই সংস্থার উদ্যোগে অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র উপত্যকা জুড়ে চাষ করা হচ্ছে সমুদ্রশৈবাল। আর তার ফলে সমুদ্রের জলে মিশে থাকা কার্বনের অনেকটাই অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে। ১০০ হেক্টর জমিতে সমুদ্রশৈবাল চাষ করা হলে প্রায় ৮৩০০০ টন কার্বন অপসারণ করা যায়। তবে বাকুশের কাছে এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ একটাই, সার্চ ইঞ্জিনের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা। গুগলের একচেটিয়া বাজারে অনেকেই জানেন না এরকম বিকল্প সার্চ ইঞ্জিনের অস্তিত্ব। অনেকেই আবার ব্রাউজার এবং সার্চ ইঞ্জিনকে এক করে দেখেন। মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন করতে পারলে যে তাঁরা 'ইকোরু'কে স্বাগত জানাবেন, সে বিষয়ে আশাবাদী বাকুশ। আর তাহলে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে তাঁর এই উদ্যোগ অনেকটাই সফল হবে। আর তাঁর পাশে দাঁড়াতে আপনাকে শুধু পাল্টাতে হবে আপনার ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন।