নাগরিকত্ব নিয়ে উত্তাল আসাম, চলল গুলি – ‘শান্তি’র পথ বুঝি এমনই?

১২৫-১০৫। এই মুহূর্তে গোটা দেশের সবচেয়ে চর্চিত ফিগার বোধহয় এটাই। এই একটিই ব্যাপার গোটা দেশের নাগরিকদের সামনে অনেকগুলো প্রশ্নচিহ্ন খাড়া করে দিল। কথা হচ্ছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে। রাজ্যসভা ও লোকসভা— সম্প্রতি দুটি জায়গাতেই পাশ হয়ে গেছে এই বিল। ১২৫-১০৫ ভোটে রাজ্যসভায় জিতে গেছে শাসক পক্ষ।

অন্যদিকে চলছে ট্রিগারও। বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পরপরই গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত, পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণের কিছু জায়গায় প্রতিবাদ হয়েছে। তবে তীব্রতা সবচেয়ে বেশি উত্তর-পূর্বে। ত্রিপুরা, আসামে ইন্টারনেট যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ। মেঘালয়তেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নেট ব্যবস্থা। সমস্ত জায়গায় মানুষের প্রতিবাদ, জমায়েত, ধর্না জারি রয়েছে। বিক্ষোভের লক্ষ্য একটাই - নাগরিকত্ব বিল ও এনআরসি। তার মধ্যেই চলছে পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেফতার। চলেছে ট্রিগারও। গুয়াহাটিতে পুলিশের ওপেন ফায়ারে অন্তত দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। জায়গায় জায়গায় জারি হচ্ছে কারফিউ।

অবশ্য কেন্দ্রের বক্তব্য স্পষ্ট। এইসব ‘দেশদ্রোহী’ কার্যকলাপ কিছুতেই সহ্য করবেন না তাঁরা। তাই আসামের সব টিভি মিডিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এইসব ‘দেশদ্রোহী’ ঘটনা যেন না দেখানো হয়। তাতে নাকি নষ্ট হবে ‘সম্প্রীতি’। কিন্তু কেন্দ্র বর্ণিত সম্প্রীতিটি আসলে ঠিক কী, তার উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। বিক্ষুব্ধ জনগণের কথায়, যে বিল দেশের মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ভেদ প্রতিষ্ঠা করছে, তা কী করে সম্প্রীতির বার্তাবাহী হতে পারে? ভারতের সংবিধান যে সম্প্রীতির কথা বলে, তার সঙ্গে কেন্দ্রের ‘সম্প্রীতি’র এত অমিল কেন?

প্রশ্ন উঠছে অনেক। প্রতি মুহূর্তে জন্ম নিচ্ছে আরও অসংখ্য প্রশ্ন। আসামের বিক্ষুব্ধ জনগণ পুড়িয়ে দিয়েছেন এক বিজেপি নেতার বাড়ি। নিন্দনীয় সে-ঘটনাও। কিন্তু রাষ্ট্রের কোনো একপাক্ষিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এভাবে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে, রাষ্ট্রও কি পাল্টা কণ্ঠরোধ করতে এগিয়ে আসবে? ‘গণতান্ত্রিক দেশ’-এর লক্ষণের সঙ্গে মিলছে না কিছুই। ঘটনা বেড়ে চলেছে কেবল...

Latest News See More