‘নির্বাসন’ কাটিয়ে বাইশ গজে প্রত্যাবর্তন, আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই মাহি-ম্যাজিক

ক্রিকেট পিচ থেকে দীর্ঘ এক বছরের দূরত্ব এবং সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটদুনিয়াকে বিদায় জানানো— বারবার মন ভেঙেছে ধোনি-ভক্তদের। চলতি আইপিএলের শুরুর ম্যাচেই তাই এক আলাদা টান টান উন্মাদনা ছিলই ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ধোনিকে বাইশ গজে আবার দেখার জন্য উদগ্রীব ছিলেন সহবাগের মতোই ক্রিকেট তারকারাও।

প্রথম ম্যাচেই অধিনায়কত্বে পুরনো ফর্মকেই আবার মনে করিয়ে দিলেন ধোনি। গত বছরের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানকে চার বল বাকি থাকতেই ধরাশায়ী করল ধোনির চেন্নাই। গত আইপিএলের ফাইনালের মধুর প্রতিশোধ এর থেকে আর বেশি কীই বা হতে পারে। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ‘ফিনিশার’ ধোনি। রান তাড়া করবার ক্ষেত্রে তাঁর স্ট্র্যাটেজি যে চিরকালই অপ্রতিরোধ্য, তাই যেন প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। 

গত ১৫ আগস্ট সন্ধে ৭টা ২৯ মিনিটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ধোনি। কার্যত সেই শেষ থেকেই শুরু করলেন নতুন যাত্রা। শনিবার ঠিক সাড়ে সাতটাতেই প্রথম ক্রিকেটের মাঠে পা রাখলেন ‘ক্যাপটেন কুল’। দু’দুটি রেকর্ড ভাঙার সুযোগকে তাড়া করেই। চলতি আইপিএলে ১৭টি উইকেট শিকার করলেই আইপিএলের ইতিহাসে ১৫০টি উইকেট সংগ্রহকারী প্রথম উইকেটকিপার হিসাবে মুকুট ওঠার কথা ছিল ধোনির মাথায়। পাশাপাশিই হাতছানি ছিল ঋষভ পান্থের গত মরশুমের ২৪টি উইকেট নেওয়ার রেকর্ডকেও ভেঙে ফেলার। সেই লক্ষ্য থেকে এতটুকুও বিচলিত নন ধোনি, তাই যেন বুঝিয়ে দিলেন শুরুর ম্যাচেই। শূন্যে শরীর ভাসিয়ে দুটি অনবদ্য ক্যাচ নিলেন তিনি।

শুরুতে ব্যাট করে মুম্বাই ১৬৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল চেন্নাইয়ের সামনে। টি-২০র হিসাবে এই রান তাড়া করা কঠিন না হলেও, শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল ধোনিবাহিনীকে। তবে ডুপ্লেসি আর রায়ডু’র দক্ষতায় ম্যাচে ফিরে আসে চেন্নাই। তবে জাদেজার চতুর্থ উইকেট পতনের পরেও ধোনি নামেননি ব্যাট হাতে। নেমেছিলেন কারেন। কারেনের উইকেটের পর ক্রিজে ফেরেন ধোনি। তবে সেইভাবে কোনো ঝলক দেখা যায়নি তাঁর ব্যাটিংয়ে। মুখোমুখি হলে মাত্র দু’ বলের। সংগ্রহ অপরাজিত শূন্য রান। তার আগেই বিজয় ঘণ্টা বেজে উঠল সিএসকে শিবিরে। 

আরও পড়ুন
অবসর নিয়েছেন ধোনি, ক্ষোভে দর্শকাসন থেকে চির বিদায় পাকিস্তানের ‘বসির চাচা’র

তবে প্রথম বলেই আম্পায়ার আউট দিয়েছিলেন ধোনিকে। কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্তকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন মাহি। ডিআরএসে তাঁর থেকে দক্ষ, বিচক্ষণ চ্যালেঞ্জার যে খুব কম আছে, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন ধোনি। এক বছর পর বাইশ গজে নেমে কোনো রান না পেলেও, ক্রিকেটের দুনিয়ায় তিনি যে এখনও অপ্রতিরোধ্য, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কোনো। ক্যাপটেন কুলের নেতৃত্বে এই জয়ের পর দর্শকরা মুখিয়ে রয়েছেন ধোনির হাত থেকে ঝোড়ো ইনিংস দেখার অপেক্ষায়। পরবর্তী ম্যাচেই কি সেই বিধ্বংসী চরিত্রে দেখা যাবে মাহিকে? চর্চা সব মহলেই...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অবসর ঘোষণা ছিল পূর্বপরিকল্পিত, কিন্তু ধোনি-রায়না কেন বেছে নিলেন ১৫ আগস্টকেই?