বায়ুদূষণ রুখতে দেশের প্রথম স্মগ টাওয়ার দিল্লিতে

প্রতিবছর শীতকাল এলেই বদলে যায় দিল্লির ছবি। ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে যায় রাজধানী। আকাশ ছোঁয় দূষণের মাত্রা। ইলেকট্রিক জেনারেটর বন্ধ করে, যানবাহনের সংখ্যায় জোড়-বিজোড় নীতি লাগু করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না সেই দূষণ। এবার এই ঘাতক বায়ুদূষণের সঙ্গে লড়াই করতেই অভিনব পদক্ষেপ নিল কেজরিওয়াল সরকার। দিল্লিতে বসল ভারতের প্রথম স্মগ টাওয়ার।

গত ২৩ আগস্ট দিল্লি তথা ভারতের প্রথম অত্যাধুনিক এই দূষণ নিয়ন্ত্রক টাওয়ারটির উদ্বোধন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। উপস্থিত ছিলেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাইও। তবে ২০২০ সালের মধ্যেই এই টাওয়ারের কাজ শেষ হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন কেজরিওয়াল। করোনা আবহের জন্য প্রায় এক বছর বেশি সময় লাগল এই টাওয়ার প্রতিষ্ঠায়।

দিল্লির কনট প্লেসের বাবা খড়ক সিং মার্গে প্রায় ২০ কোটি টাকার বিনিয়োগে স্থাপিত হয়েছে ২৪ মিটার বা প্রায় ৮ তলা বাড়ির সমান উঁচু স্মোগ টাওয়ারটি। এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের পরিধির এলাকার বায়ুকে পরিশুদ্ধ করতে সক্ষম এই টাওয়ার। এমনটাই জানাচ্ছেন দিল্লি পলিউশন বোর্ডের আধিকারিকরা। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে এর ব্যবহার শুরু হয়ে গেলেও, বর্ষার পর থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করবে কনট প্লেসের এই দূষণ নিয়ন্ত্রক।

আমেরিকা থেকে আমদানি করা এই প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে দ্বিস্তরীয় বায়ু ফিল্টার। যা প্রতি সেকেন্ডে ১০০০ ঘন মিটার বায়ু থেকে সূক্ষ্ম ধূলিকণা ও অন্যান্য দূষক ছেঁকে বের করে আনতে সক্ষম। ২.৫ থেকে ১০ পিএম-এর সমস্ত ধূলিকণাকেই এই ফিল্টার আটকে দেবে বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। 

আরও পড়ুন
বিশ্বের ৫০ শতাংশ প্লাস্টিক দূষণের জন্যই দায়ী ২০টি বহুজাতিক সংস্থা!

তবে শুধু কনট প্লেসই নয়, আরও একটি স্মগ টাওয়ার বসতে চলেছে দিল্লিত আনন্দ বিহারে। দ্বিতীয় এই টাওয়ারটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। চলতি মাসের আগামী ৩১ তারিখ থেকেই কাজ করা শুরু করে দেবে আনন্দ বিহারের এই দূষণ নিয়ন্ত্রকও। পরের দু’বছর এই দুটি টাওয়ারের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ ও সমীক্ষা করার পর, দিল্লির অন্যত্রও বসতে পারে আরও কয়েকটি টাওয়ার।

আরও পড়ুন
ছাইঢাকা গোটা অঞ্চল, এন্নোর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণে বিপর্যস্ত গ্রামবাসীরা

মূলত অক্টোবর মাসের পর থেকে, ধীরে ধীরে দ্রুত গতিতে দূষণ বাড়তে থাকে রাজধানীতে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাবে এই সময় থেকেই শুরু হয় ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো। কয়েক হাজার টন ফসলের অবশিষ্টাংশ দহনের ধোঁয়াতেই আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী। এখন দেখার, অত্যাধুনিক এই দুটি স্মগ টাওয়ার স্থাপনের পর কতটা বদলে যায় দিল্লির সার্বিক চরিত্র…

আরও পড়ুন
ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির সমস্ত দূষণ শুষে নিতে পারে এই উদ্ভিদ!

Powered by Froala Editor